ঢামেক প্রতিবেদক
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে পোশাকশ্রমিকের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী নির্বাক হয়ে শুয়ে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের পাশে। আট বছরের একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল বাকী মরিয়ম জানে না বাবার খবর।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে দেখা যায়, নিহত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস পারভীন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। মাঝেমধ্যে স্বজনদের ধরে কেঁদে উঠছেন। পাশেই আনমনে খেলছে মেয়ে। তাকে বাবার খবর জিজ্ঞাসা করতেই মরিয়ম বলে, ‘বাবা হাসপাতালে। আমাকে দেখতে দেয়নি।’
নিহত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিসের পাশে থাকা তার ভাবি হাছনা বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে একভাবে কেঁদে চলেছে নার্গিস। মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।’
জালাল উদ্দিনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করছিল গার্মেন্টস শ্রমিকেরা। সেখানে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিল। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।’
কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেব? কার বিরুদ্ধে মামলা করব। আমার ভাই মারা গেছে। আট বছরের মেয়েটা এতিম হয়েছে। সংসারটা ভেঙে চুরমার হয়েছে। ভাইয়ের মরদেহ মর্গে থেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি কেন্দুয়া বাসাটি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই দাফন করা হবে বলে জানান ভাই সাইফুল ইসলাম।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নীল কমল চক্রবর্তী বলেন, ‘বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
৮ নভেম্বর কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় শ্রমিকদের আন্দোলনে গুলিতে আহত হন জালাল উদ্দিন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান জালাল। কোনাবাড়ীর জরুনে ইসলাম গার্মেন্টসের সুপারভাইজার ছিলেন তিনি।
একই দিন ওই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আঞ্জুয়ারা খাতুন (২৮) নামে এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন।