নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে যান ও বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করার উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এর ফলে জনমনে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে যান ও বহিরাগত চলাচলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্মুক্ত করার দাবি জানায় সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা সাক্ষাৎ করে তাঁরা এ দাবি জানান। আজ শুক্রবার সংগঠনটির ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত চলাচল, ডাকসু ও শিক্ষক সমিতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং সিন্ডিকেট, সিনেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয়সহ অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণার প্রতীক’ মুছে ফেলার বিষয়টি নিয়েও নিন্দা জানায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
ভিড় কমাতে গত ১৩ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে যান ও বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করতে সাতটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড বসায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুক্রবার, শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং অফিস চলাকালীন দিনগুলোতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি, জরুরি সেবা ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ ঠেকানোর নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসে ভিড় কমায় শিক্ষার্থীরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সমালোচনা করছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের মনে রাখা দরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এক ঐতিহাসিক জনপরিসর। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা থাকার কারণে জাতীয় অনেক উদ্যাপনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানসহ প্রায় সব জাতীয় ও রাজনৈতিক আন্দোলন এখানেই শুরু হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘নানান সভা-সেমিনার, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রাণকেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ হিসেবেও এই এলাকাটুকু পুরো শহরের নিশ্বাস ফেলার জায়গা। আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস কাছাকাছি হওয়ায় সিটি করপোরেশনের যে রাস্তাগুলো ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে চলে গেছে, সেগুলোতে যান চলাচল ক্যাম্পাসের বাইরের নাগরিকদের অধিকার।’
উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, রুশাদ ফরিদী, মোশাহিদা সুলতানা, কাজলী সেহরীন ইসলাম, দীপ্তি দত্ত, মারজিয়া রহমান, সামিনা লুৎফা প্রমুখ।