নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাতের মামলায় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ করে অপরাধ আমলে নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেন অভিযোগ আমলে নেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, উজ্জল কুমার নন্দি, পূর্ণিমা রানী হালদার, রাজিব সোম, রতন কুমার বিশ্বাস, ওমর শরীফ, নূরুল আলম, নাসিম আনোয়ার, নূরুজ্জামান, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ আবুল হাশেম, জহিরুল আলম, আনোয়ারুল কবির, নওশেরুল ইসলাম, বাসুদেব ব্যানার্জি, রাশেদুল হক, সৈয়দ আবেদ হাসান, নাহিদা রুনাই, আল মামুন সোহাগ, রাফসান রিয়াদ চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম খান।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবেদ হাসান ও ব্যবস্থাপক রাফসান রিয়াদ চৌধুরী কারাগারে আছেন। তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলায় পি কে হালদারসহ ১৯ জন পলাতক রয়েছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ সহ বিভিন্ন ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারার অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান অ্যানন কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীকালে বিভিন্নভাবে ওই অর্থ একাধিক কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে পাচার করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান গত ২৯ এপ্রিল চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি পি কে হালদারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মামলা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পি কে হালদার এবং তাঁর ৮৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৫২টি মামলা দায়ের করে।
ইতিমধ্যে একটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ২২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে পি কে হালদার। ২০২২ সালের ১৪ মে ভারতে আটক হওয়ার পর সেখানে কারাগারে রয়েছেন পি কে হালদার। অবশ্য মায়ের মৃত্যুজনিত কারণে বর্তমানে তিনি ১৫ দিনের জন্য জামিনে আছেন এবং ভারতে অবস্থান করছেন।