প্রতিনিধি
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল): করোনাকালীন সময়ে ঘাটাইলের সদরে বেশ জনপ্রিয় ওয়ে ওঠেছে ছাদকৃষি। বাসার ছাদ বাগানগুলো বাহারি শাক, সবজি ও ফলমূল দিয়ে ভরে ওঠেছে। লকডাউনের সময় নাগরিকদের কাজের ক্ষেত্র হয়ে ওঠেছে এই ছাদকৃষি। এর ফলে অনেক পরিবারের বাজার নির্ভরতা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইস্ট্রাক্টর রাজিয়া সুলতানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গতবছর মার্চ মাসে যখন দেশ লকডাউনে চলে গেলো তখন খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। বদ্ধ ঘরে সময় কাটছিল না। ফেসবুকের কল্যাণে ছাদকৃষির কথা আমাদের জানা ছিল। সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করলাম। স্থানীয় একটি কীটনাশক দোকান আমাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করায় কাজটি সহজ হয়েছে।
রাজিয়া সুলতানা আরও জানান, বাগানে ১৫ ধরনের শাক-সবজির আবাদ করছেন তিনি। এগুলো হলো পুঁই, কলমি, শশা, কুমড়া, পুদিনা, ডাঁটা, বেগুণ, পটল, বরবটি, পেঁপে, করলা, পেঁয়াজ, রসুল, লাউ, পাট। এছাড়া আছে বেশকিছু ধরনের মরিচ গাছ। গত একবছর বাজার থেকে কোনো মরিচ কিনেন নি বলেও জানান তিনি। এছাড়া সবজির পুরোটাই তার বাগানেই হয়।
সরকারি মাধ্যবিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দা আতিয়া সুলতানা বলেন, গৃহবন্দীত্বের সময়টা ছাদকৃষি করে কাটাচ্ছি। সময়টা যেমন দারুণ কাটছে। বাগানে প্রায় ১৪ প্রকারের শাক-সবজি হচ্ছে। ফলে পরিবারের সবজির চাহিদা পূরণ করতে পারছি।
ছাদকৃষি নিয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ফেসবুক গ্রুপের গ্রুপের অ্যাডমিন শরিফুল ইসলাম বলেন, সেই গ্রুপে ৭০ জন সদস্য আছেন। সেখানে তারা প্রতিদিনই নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় আলাপ করেন। কারো বাগানে পোকা ধরলে কী করবেন তা শেয়ার করেন। কেউ নতুন জাতের কোনো সবজি বা ফলগাছ লাগালে পেইজে শেয়ার করেন। এতে অন্যেরা অনুপ্রাণিত হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রূপালি ব্যাংকের ঘাটাইল শাখা ব্যবস্থাপক মামুন সিরাজী বলেন, ছাদকৃষি করার জন্য তার ব্যাংক প্রণোদনা ঋণ দিচ্ছে। যেকোনো উদ্যোক্তা অত্যন্ত কম সুদে ব্যাংক ঋণ নিয়েও ছাদকৃষি করতে পারেন।
ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ছাদকৃষি একটা দারুণ আইডিয়া। এর মাধ্যমে পারিবারিক শাক-সবজির চাহিদা যেমন মিটছে, তেমনি বাজারের উপর শহরের মানুষের নির্ভরতা অনেকটা কমছে। কোনো নাগরিক কৃষক যদি সহযোগিতা চান তবে আমার দপ্তর পূর্ণ সহযোগিতা দিবেন বলেও জানান তিনি।