অনলাইন ডেস্ক
দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে বেকারত্ব ক্রমেই বাড়ছে। গত বছরের শেষ দিকে বেকারত্বের হার ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ। অনেকেই চাকরি হারাচ্ছেন, আবার অনেকে চাকরি পাচ্ছেন না। এ নিয়ে পরিবার ও সমাজে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন তরুণেরা। তাঁদের এ সংকট থেকে উদ্ধার করতে দেশটির হেবেই প্রদেশে অভিনব একটি সুযোগ নিয়ে এসেছে কিছু প্রতিষ্ঠান! সেখানে স্বল্প টাকার বিনিময়ে ‘চাকরির ভান’ করতে পারবেন তাঁরা। ফলে তাঁকে বেকার হিসেবে আর কেউ চিহ্নিত করতে পারবে না।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রতিদিন ৩০ ইউয়ানের বিনিময়ে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫০০ টাকা) তরুণেরা কর্মক্ষেত্র ব্যবহার করতে পারবেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই ‘কর্মক্ষেত্রে’ কাজ করতে পারবেন। সেখানে তাঁকে ডেস্ক, কম্পিউটার ও ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। এমনকি দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও থাকবে। তিনি সেখানে বসে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করতে পারবেন।
সামাজিক চাপে নিজের বেকারত্ব আড়াল করতে অনেকেই এই সেবা বেছে নিচ্ছেন। হ্যাংজাউয়ের এক সাবেক ই-কমার্স কর্মী প্রতিদিন ক্যাফেতে বসে চাকরির আবেদন করতেন, তবে পরিবার জানত তিনি এখনো চাকরি করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের দুশ্চিন্তায় ফেলতে চাইনি।’
২৯ বছর বয়সী এক সাবেক সেমিকন্ডাক্টর কর্মী তাঁর চাকরি হারানোর বিষয়টি তাঁর নারী বন্ধুর কাছ থেকে গোপন রেখে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে লাইব্রেরিতে বসে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এই ‘কাজের ভান’ করার সেবার জনপ্রিয়তা বাড়লেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারত্বের সংকট মোকাবিলার একটি মোটেও স্বাস্থ্যকর উপায় নয়। এই প্রবণতা সমাজের সাফল্যের চাপ এবং বেকারত্ব নিয়ে বিদ্যমান সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এভাবে দীর্ঘদিন চাকরি ছাড়া থাকলে নতুন এবং ভালো চাকরি পাওয়ার সুযোগ কমে যায়।
উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক কাজের অধ্যাপক ঝাং ইয়ং বলেন, হঠাৎ চাকরি হারানোর ধাক্কা হতাশার কারণ হতে পারে। তবে এ বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা উচিত। তাদের পরামর্শ নেওয়া এবং চাকরির সম্ভাবনা নিয়ে বাস্তব ধারণা দেওয়া উচিত।