অনলাইন ডেস্ক
পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরমান্দো গুয়েবুজার ছেলে এনডাম্বি গুয়েবুজাসহ ১৮ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ২ বিলিয়ন ডলারের 'টুনা বন্ড' কেলেঙ্কারির মামলায় তাঁদের এ বিচার হচ্ছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে এরাইজ টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৫ সালে দেশটির স্বাধীনতা লাভের পরে এটি সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ। এ কেলেঙ্কারিতে ব্ল্যাকমেল, আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ মামলার অধিবেশনে আদালতে ৭০ জন সাক্ষী ও ২৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত থাকার কথা। আদালতের কোন কক্ষে এত লোক বসার ব্যবস্থা না থাকায় রাজধানীর উপকণ্ঠে একটি সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কারাগারের মাঠে বড় তাঁবু টানিয়ে বিচার চলছে।
আদালতের প্রথম অধিবেশনে বিচারক বলেন, সকল আসামিকে অবশ্যই কারাগারের ইউনিফর্ম পরে আদালতে উপস্থিত হতে হবে।
জানা যায়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ক্রেডিট সুইচ এবং রাশিয়ান ব্যাংক ভিটিবি থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় মোজাম্বিকের নতুন প্রতিষ্ঠিত তিনটি কোম্পানি। কোম্পানি তিনটি হচ্ছে—প্রোইন্ডিকাস, এমাটাম (মোজাম্বিক টুনা কোম্পানি) এবং এমএএম (মোজাম্বিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট)। এই ঋণে গ্রান্টার হিসেবে রাখা হয় মোজাম্বিক রাষ্ট্রকে। অর্থাৎ, গ্রহীতারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র পরিশোধ করবে। অথচ, সংসদের অনুমোদন ছাড়াই এ ঋণ তোলা হয়েছে। এ জন্য একে 'টুনা বন্ড' কেলেঙ্কারি নাম দেওয়া হয়েছে।
তবে ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। এই অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে প্রেসিডেন্টের ছেলের নামও। এ ঘটনায় দেশটি বড় আর্থিক সংকটে পরে যায়। দেশটিতে বৈদেশিক ঋণ আসাও বন্ধ হয়ে যায়। দেশে মুদ্রার মান ৬৬ শতাংশ কমে যায়, দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি। ভেঙে পরে দেশের অর্থনীতি।
তিন সাবেক ক্রেডিট সুইচ ব্যাংকার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ পাচারের অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন।
প্রসঙ্গত, আরমান্দো গুয়েবুজা আর পদে নেই। তবে তার দল ফ্রিলিমো পার্টি দেশটির ক্ষমতায় রয়ে গেছে।