নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করায় গাইবান্ধা সদরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দুই বছরের জন্য এক ধাপ পদাবনতি দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া আত্মসাৎ করা ৪৩ লাখ টাকা বেতন থেকে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগে পদায়নের জন্য ন্যস্তকৃত মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়ে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, শফিকুর রহমান গাইবান্ধা সদরের ইউএনও থাকাকালে গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধা সদরে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প কমিটি গঠন না করা, একক দায়িত্বে কাজ করা, মাটির কাজ না হওয়া সত্ত্বেও ঘরের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করা, অ্যাকাউন্ট পে-চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন না করে নগদ টাকা উত্তোলন করা, বদলিজনিত কারণে দায়িত্ব হস্তান্তরের পরেও বিধিবহির্ভূতভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া, ৫৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে গোপনীয় সহকারীর নিকট জমা রাখা, কারিগরি ও সাধারণ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না করার অভিযোগে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অদক্ষতা, অসদাচরণ ও দুর্নীতিপরায়ণতার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিভাগীয় মামলা করে কৈফিয়ত তলব করা হয়।
২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি শফিকুর রহমান লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন। ২০২০ সালের ৮ মার্চ ব্যক্তিগত শুনানি করে ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। শফিকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে নিম্নপদে অবনমিতকরণ এবং আত্মসাৎকৃত ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮০ টাকা তার বেতন-ভাতা থেকে আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে গুরুদণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে পিএসসির মতামত চাওয়া হয়। এ বিষয়ে পিএসসি একমত পোষণ করেছে এবং রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দুই বছরের জন্য নিম্নপদে অবনমিতকরণ অর্থাৎ তাঁর বর্তমান বেতনস্কেল ৩৫ হাজার ৫০০-৬৭ হাজার ০১০ টাকার বদলে ২৯ হাজার-৬৩ হাজার ৪১০ টাকা স্কেলে ৩৮ হাজার ৮৯০ টাকা মূল বেতনে সহকারী কমিশনার বা সহকারী সচিব পদে অবনমনের গুরুদণ্ড আরোপ এবং আত্মসাৎকৃত ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮০ টাকা বেতন-ভাতা থেকে আদায়ের সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।