ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের তালা ভেঙে মূল্যবান সামগ্রী ও কাগজপত্র বের করে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করে তাঁর কক্ষে তালা মেরে দেয় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে ওই কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রুহুল আমিন জানান, আজ দুপুরে হঠাৎ তিন যুবক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাঁরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে ভেতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, ক্রেস্ট ও বই বস্তায় করে নিয়ে যান। পরে তাঁরা বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে নদীর পাড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যান।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী সুমন পাল জানান, তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বিদ্যালয়ে এলে কর্মচারী রুহুল আমিন ভাঙচুরের কথা জানান। তাৎক্ষণিক তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জানাতে তাঁর কাছে ছুটে যান।
বিদ্যালয়ের বেশ কয়েক শিক্ষক জানান, তাঁরা শ্রেণিকক্ষে ছিলেন ঘটনার সময়। পরে এসব ঘটনা শোনেন। এদিকে এত বড় একটি ঘটনা ঘটলেও কেউই ওই দুর্বৃত্তদের আটকের চেষ্টা করেননি, যা রহস্যজনক। তবে স্থানীয়রা জানান, দুর্বৃত্তরা চিহ্নিত, ভয়ে মুখ খুলছেন না কর্মচারীরা।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শামীম হাসান বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে তারুণ্যের উৎসব নিয়ে কাজ করছিলেন। ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের তালা ভাঙা এবং ভেতরে প্রবেশ করে সব স্টিলের আলমিরা খোলা দেখতে পান।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় দক্ষিণ পাশের ভবনে কাজ করছিলাম। অফিস সহকারী এসে আমাকে জানান। আমি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে প্রতিটি আলমিরা খোলা এবং জিনিসপত্র এলোমেলো দেখতে পাই। আমি ইউএনওর (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে থানায় জিডি করেছি। আমার ধারণা, এই চুরি, ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত।’
ইউএনও সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে থানায় জিডি করতে বলেছি। এই বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’