হোম > সারা দেশ > রংপুর

বাক্সবন্দী লাখ লাখ টাকার যন্ত্র

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 

বরাদ্দের পর থেকে এভাবেই বাক্সবন্দী রয়েছে ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পানির ৫৭টি পরীক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগার। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে উদ্বোধনের চার বছর পরও জেলার একমাত্র পানি পরীক্ষাগারটি চালু করা যায়নি। অথচ দূষিত পানি পান করে টাইফয়েড, কলেরা, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিসসহ নানা পানিবাহিত রোগের ভুগছে সাধারণ মানুষ। এদিকে পরীক্ষাগারের ভেতরে বিশুদ্ধ পানি নির্ণয়ে কেনা লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি অলস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, জেলার মানুষ যেন নিরাপদ ও সুপেয় পানি পান করতে পারে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের পাশে আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগারের দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের ১৫ জুন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রংপুর সার্কেলের প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা এই পরীক্ষাগারের উদ্বোধন করেন। ৮ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটিতে একটি ল্যাব রুম, সিনিয়র কেমিস্ট রুম, জুনিয়র কেমিস্ট রুম, জেনারেল অফিস সেকশন ও স্টোর কক্ষ রয়েছে একটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পরীক্ষাগারের কাজে ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন সময়ে ল্যাবের যন্ত্রপাতি ও আসবাব বরাদ্দ আসে। কিন্তু লোকবলের অভাবে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা সব যন্ত্র বছরের পর বছর ধরে বাক্সবন্দী পড়ে আছে।

ঠাকুরগাঁও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মালেক বলেন, ‘পরীক্ষাগারটি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সময়ে ল্যাবের যন্ত্রপাতি এলে তা গ্রহণ করে অফিসের ভেতরে রাখা হয়। আর চুরি হওয়ার আশঙ্কায় জেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে রাখা হয়েছে এয়ারকন্ডিশন, কম্পিউটার ও ফটোকপি মেশিন।’

পানি পরীক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত যন্ত্রপাতি পকেটবন্দী রয়েছে। দিন দিন সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ল্যাবের পাশের বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম জানান, গত চার-পাঁচ বছর দেখছি ভবনটি এভাবে পড়ে আছে। বিভিন্ন সময়ে এ ল্যাবের জন্য মালামাল এলেও সেগুলো দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

সদর উপজেলা দৌলতপুর নর্থ অ্যাগ্রোস লিমিটেড নামের একটি মুরগির ফার্মের বিষ্ঠায় অতিষ্ঠ আশপাশের পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ওই গ্রামের বৃদ্ধ শরিফা বেগম বলেন, ‘নলকূপ চাপলে কালো পানি বের হয়। দুর্গন্ধে পানি পান করা যায় না। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ এ সমস্যায় ভুগতেছি।’

তজিমুল নামের স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এ পানি পান করতে গেলে নাকে বোটকা গন্ধ লাগে। পানি কতটা ক্ষতিকর তা জানার জন্য কোনো পরীক্ষাগার নাই।’

তিলডাঙ্গী এলাকার স্কুলশিক্ষক নুর ইসলাম বলেন, ‘গ্রামে দূষিত পানি পান করে প্রতিবছর ডায়রিয়া, কলেরাসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। গত ১০ বছরেও এ এলাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানকে পানি পরীক্ষা করতে দেখিনি। নিয়ম অনুযায়ী স্যাম্পল কালেকশন করে পানি পরীক্ষা করা উচিত।’

ঠাকুরগাঁও পরিবেশবাদী সংগঠন সৃজনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পানির পরীক্ষাগারের অভাবে এর মান সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাই না। ফলে দূষিত পানি ব্যবহার করে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছি।’

ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এ কে এম জাহিন মিঠু বলেন, ‘দূষিত পানি পান করলে সাধারণত টাইফয়েড, কলেরা, আমাশয়, হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিভিন্ন উৎসের পানির গুণগত মান নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন।’

হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পানির গুণগত মান পরীক্ষায় ল্যাব চালুর প্রসঙ্গে সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘ল্যাব চালুর বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে আলোচনায় রয়েছে। তবে কবে নাগাদ এটি চালু হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধাক্কা খেয়েছে জনগণের প্রত্যাশা: নুর

লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু

মানুষের কষ্টের আগুনে পেট্রল ঢেলেছে সরকার: নুরুল হক

দেড় কিলোমিটার দূরে পুলিশের ফায়ারিং রিহার্সাল, বাড়িতে গুলিবিদ্ধ কিশোরী

ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির মহোৎসব

গাইবান্ধায় দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ইউপি সদস্যের

পঞ্চগড়ের মানুষ চাইলে সারজিস কিংবা কোনো তরুণ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন

মিজানুর রহমান আজহারী লালমনিরহাট যাচ্ছেন শনিবার

শুধু একটি ভোটের জন্য এই গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: নুরুল হক নুর

দিনাজপুরের সাবেক এমপি রেজিনা ইসলাম মারা গেছেন

সেকশন