অনলাইন ডেস্ক
কুয়েতের মাঙ্গাফ শহরে আবাসন শ্রমিকদের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন ভারতীয় শ্রমিকও রয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই।
কুয়েতে স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে আহত প্রায় ৪৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ বুধবার ভোরে ছয়তলা ভবনের একটি রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবনটিতে প্রায় ১৬০ জন লোক বাস করতেন, তাঁরা একই কোম্পানির শ্রমিক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের পঞ্চম তলা থেকে কয়েকজন লাফ দিয়ে মারা যান।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ ঘটনায় শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে বলেছেন, কুয়েত সিটিতে অগ্নিকাণ্ডের খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। সেখানে ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আমাদের রাষ্ট্রদূত ক্যাম্পে গেছেন। আমরা আরও তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি।
কুয়েতে ভারতীয় দূতাবাস একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। কুয়েতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘আজকের অগ্নিকাণ্ডে আহত ৩০ জনেরও বেশি ভারতীয় শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ভারতীয়রা কুয়েতের মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ (১০ লাখ) এবং জাতীয় কর্মশক্তির ৩০ শতাংশ (প্রায় ৯ লাখ)।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বরাত দিয়ে জানিয়েছে, যে ভবনটিতে আগুন লেগেছে সেটি আবাসন শ্রমিকদের বসবাসের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। ভবনটিতে বহু শ্রমিক ছিলেন। বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়া ও শ্বাসরুদ্ধ হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে কুয়েতের জনকল্যাণ ও পৌর মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. নুরা আল মাশান কুয়েত সিটির আল আহমাদি পৌর প্রশাসকদের সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছেন। মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, পৌর কর্তৃপক্ষকে এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন। আর বরখাস্তকৃত প্রশাসকদের স্থলে অন্য শাখার প্রশাসকদের বসানো হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৯ সালে এক কুয়েতি নারী স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রতিশোধ নিতে বিয়ের পার্টির এক তাঁবুতে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। নুসরা আল–এনেজি নামে ওই নারী তাঁবুতে পেট্রল ছুড়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০১৭ সালে তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।