তামান্না-ই-জাহান
বন্ধু চল রোদ্দুরে
মন কেমন মাঠ জুড়ে
খেলব আজ ওই ঘাসে
তোর টিমে তোর পাশে…
অনুপম রায়ের গাওয়া এই গানটা শুনলেই বন্ধুদের জন্য মন কেমন করে ওঠে। আমরা যত বড়ই হই না কেন, ঘুরেফিরে ভাবনাহীন শৈশব আর কৈশোরেই ফিরে যেতে চাই। আর সেই সোনালি সময়টার বড় অংশজুড়ে থাকে ছোট্টবেলার খেলার সাথি, বন্ধুরা।
জীবনের নানা অধ্যায়ে, বিভিন্ন বয়সে, ভিন্ন কর্মকাণ্ডে বারবারই সামনে আসে বন্ধুত্ব। মন খারাপ কিংবা ভালো, দুঃখ ভাগ কিংবা সুখ উদ্যাপনে কিংবা দুর্দিনে পরিবারের পর নিঃস্বার্থভাবে পাশে থাকতে পারে এই বন্ধু নামক মানুষটি।
যদিও বন্ধু দিবস পৃথিবীর একেক অঞ্চলে একেক দিনে উদ্যাপিত হয়। আমেরিকা মহাদেশের অনেক দেশে ফেব্রুয়ারিতে উদ্যাপন করা হয় বন্ধু দিবস। এশিয়ার অনেক দেশে আবার আগস্ট মাসের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস। বাংলাদেশেও বন্ধুত্বের এই দিনটি উদ্যাপন করা হয় আগস্টের প্রথম রোববার। বন্ধু দিবসে ফুল, কার্ড, রিস্ট ব্যান্ড ইত্যাদি উপহার দিয়ে বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করা হয়। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে, পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটান।
১৯৫৮ সালে বন্ধু দিবস উদ্যাপনের ক্ষেত্রে একটি আনুষ্ঠানিক সংগঠনের জন্ম হয়। র্যামন আরতেমিও ব্রাচো নামের এক ব্যক্তি প্যারাগুয়েতে গড়ে তোলেন ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড’ নামের একটি ফাউন্ডেশন। গঠনের পর থেকেই এই ফাউন্ডেশন বন্ধু দিবসের একটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালাতে থাকে। র্যামন ও তাঁর সতীর্থরা চেয়েছিলেন বন্ধুত্বের শক্তিকে উদ্যাপন করতে। এর মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংস্কৃতি সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য ছিল তাঁদের। ওই সময় এই ফাউন্ডেশন ‘ফ্রেন্ডশিপ উইক’ আয়োজন করত। সেই বিশেষ সপ্তাহটি শেষ হতো ৩০ জুলাই।
অবশেষে দীর্ঘ ৫৩ বছরের চেষ্টার পর ২০১১ সালে জাতিসংঘ প্রতি বছরের ৩০ জুলাইকে আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস (ইন্টারন্যাশনাল ডে অব ফ্রেন্ডশিপ) হিসেবে ঘোষণা দেয়। এভাবেই বন্ধুত্ব উদ্যাপনের আয়োজন পায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, হিন্দুস্তান টাইমস, জাতিসংঘ, নিউইয়র্ক টাইমস