হোম > জাতীয়

নভেম্বরে মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের প্রত্যাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করোনার টিকা বঙ্গভ্যাক্স এখন প্রাণীর দেহে ট্রায়াল পর্যায়ে আছে। এটি আগামী মাসে শেষ হবে। এরপর নভেম্বরে মানবদেহে টিকাটি ট্রায়ালের আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। আট মাস আগে গত ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনের জন্য আবেদন করে গ্লোব বায়োটেক। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রটোকল পর্যালোচনা এবং শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি গ্লোবকে চিঠি দেয় বিএমআরসি।

সেই চিঠির জবাবও দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তারপরও চার মাসের বেশি সময় পর গত ২২ জুন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর ট্রায়াল সম্পন্ন করতে বলে বিএমআরসি। সে অনুযায়ী গত ১ আগস্ট থেকে বানরের ওপর ট্রায়াল শুরু করে বঙ্গভ্যাক্স। এই ট্রায়াল সম্পন্ন হতে আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে গ্লোব বায়োটেক।

বঙ্গভ্যাক্সের অ্যানিমেল ট্রায়ালের পথ এত সহজ ছিল না। প্রথমে বিদেশে ট্রায়ালের চেষ্টা চালিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ভারতে ট্রায়াল চালাতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারের প্রটোকল মেনে আসতে হবে জানিয়ে জিটুজির মাধ্যমে আবেদন করতে বলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী সরকারের কাছে চিঠিও দেয় গ্লোব। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পায়নি তারা। পরে কোনো উপায় না পেয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী বানরের ওপরই ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। তবে কতটি বানরের ওপর প্রয়োগ হবে, তা জানাতে রাজি হয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেকের হেড অব কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ন্যূনতম ভালো একটি সংখ্যা হতে হয়। সেটি ১২, ২৪, ৩০ কিংবা ৩৬ হতে পারে। এখন পর্যন্ত অ্যানিমেল ট্রায়াল বেশ ভালোভাবেই চলছে, যা আগামী মাসের মাঝামাঝি শেষ হবে।

এরপর ট্রায়ালের প্রতিবেদন বিএমআরসিতে জমা দিতে হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছে, প্রতিবেদন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুমতি দেবে। সেটি হলে নভেম্বরই হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করা যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘হিউম্যান ট্রায়ালে তিনটি ফেজ আছে। আমরা দুটির জন্য আবেদন করেছি, যা সম্পন্ন করতে আড়াই থেকে তিন মাস লাগবে। বানর ও মানবদেহে ট্রায়ালের ফলাফল প্রায় একই হবে। সবকিছু দেখে বিএমআরসি চাইলে তিনটিরই একসঙ্গে অনুমোদন দিতে পারে। আসলে সবকিছু নির্ভর করছে বিএমআরসি ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওপর।’

গ্লোব বায়োটেক জানিয়েছে, প্লাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক মাস এবং মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছয় মাস সংরক্ষণ সম্ভব দেশীয় এই টিকা। গতানুগতিক ও প্রচলিত টিকাগুলো ভাইরাস ও ভাইরাসের বিভিন্ন অংশ বহন করায় প্রতিটি টিকা তৈরির ক্ষেত্রে ইঁদুরের পাশাপাশি বানর কিংবা শিম্পাঞ্জিতে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। তাই দেশে প্রয়োগ হওয়া কোভিশিল্ড ও চীনের সিনোফার্মাও এ ধরনের টিকা হওয়ায় বানরে প্রয়োগ করতে হয়েছে। তবে এমআরএনএ টিকার ক্ষেত্রে এটির প্রয়োজন হয় না। যেমনটা হয়নি মডার্না ও ফাইজারের ক্ষেত্রে।

ভারতীয় বা ডেলটা ধরনের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকান, নাইজেরিয়ান ও ব্রাজিল ছাড়া মোট ১১টি ধরন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক ডেলটা। এসব ধরনের সঙ্গে সিকোয়েন্স অ্যানালাইজ করে বঙ্গভ্যাক্সের সিকোয়েন্স মিলিয়ে দেখা হয়েছে। প্রতিটি ধরনের বিরুদ্ধে ভঙ্গভ্যাক্স কার্যকর বলেও দাবি গ্লোব বায়োটেকের।

সবকিছু সম্পন্ন করে বঙ্গভ্যাক্স কবে নাগাদ বাজারে আসতে পারে–জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেকের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘একমাত্র সরকারই সেটি বলতে পারবে। এমনকি হিউম্যান ট্রায়াল হবে কি না, সেটিও সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।’

আরও পড়ুন:

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা কারা, তালিকা করতে কমিশন গঠন চেয়ে রিট

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে অপসারণে দুদকের তৎপরতা

ওপারের কেউ অবৈধভাবে এপারে আসতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গবেষণায় শিক্ষক-কর্মচারীরা পাবেন আর্থিক সহায়তা, নীতিমালা জারি

পূর্বাচলে হাসপাতাল করতে জমি পাবে চীন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

শিগগিরই ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়াকে রূপপুরের ঋণ কীভাবে শোধ করবে বাংলাদেশ

পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিস্ফোরক মামলায় ২ শতাধিক আসামির জামিন

কবি কাজী নজরুলের নাতি বাবুল কাজী মারা গেছেন

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

সেকশন