নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানবদেহে পরীক্ষার জন্য অনুমোদন পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন এর সই করা চিঠিতে এ কথা জানা যায়।
এর আগে বিএমআরসিতে গত ১ নভেম্বর বানরের দেহে চালানো পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় গ্লোব বায়োটেক। প্রতিবেদন জমার পর গত রোববার বৈঠকে বসে বিএমআরসির ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটি। ওই দিনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকেই মূলত টিকাটি মানবদেহে পরীক্ষার অনুমোদন মেলে।
এদিকে, বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ এমআরএনএ (মেসেঞ্জার রাইবোনিউক্লিক এসিড) দিয়ে তৈরি, তাই এটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ও কার্যকর হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি এক ডোজের। ইঁদুরের দেহে টিকাটি পরীক্ষা করে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা পায় গ্লোব বায়োটেক। টিকাটি শতভাগ নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়। পরে বিএমআরসির নির্দেশনা অনুসারে বানরের দেহে পরীক্ষা চালানো হয়। প্রাথমিক ফলাফলে টিকাটি বানরের দেহে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে বানরের দেহে চ্যালেঞ্জ ট্রায়ালে দেখা যায় করোনার যতগুলো ভেরিয়েন্ট এসেছে তার সব কটিতেই টিকাটি শতভাগ কার্যকর।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বঙ্গভ্যাক্সের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের নীতিগত পরীক্ষার জন্য বিএমআরসির কাছে প্রটোকল জমা দেয় গ্লোব বায়োটেক। বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী সংশোধিত প্রটোকল জমা পড়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি। গত ২২ জুন বিএমআরসি মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়, যদিও এর আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা করার শর্ত দেওয়া হয়। গত ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি বানরের দেহে পরীক্ষা শুরু করে, যা শেষ হয় ২১শে অক্টোবর।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০২০ সালের ২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) রোগের টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়।