নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অনেক কষ্ট অনেক ‘না পাওয়া’ আর হতাশা বুকে চেপেই আজ নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ঢাকা আবাহনী। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটিতে ফকিরেরপুলকে ২-০ গোলে হারিয়ে জমে থাকা সেই কষ্ট যেন কিছুটা কমিয়েছে আকাশি-নীলরা।
নিজেদের ইতিহাসে এতটা খারাপ সময় কখনো দেখেনি আবাহনী। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্লাবটিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। লুট হয় ৫২ বছরের অর্জিত শিরোপা গুলোও। এরপর দল গড়া নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। শেষ পর্যন্ত দল গড়লেও বিদেশি কাউকে রাখতে পারেনি ক্লাবটি। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া আবাহনী শেষ কবে খেলেছে বলা মুশকিল। তবু এই জয় তাদের নতুন করে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাতে পারে।
গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধে দলটির আক্রমণভাগ তাদের সর্বোচ্চটা ঢেলে দেয়। তাতে সাফল্যও আসে। ম্যাচের ৭১ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় আবাহনী। কামরুল ইসলামের বাড়ানো বল নিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়াল ভাঙেন এনামুল গাজী। এরপর গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বলটা ফকিরেরপুলের জালে জড়ান। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তাঁর হাতে।
গত বছর থেকে আবাহনীর জার্সিতে খেলছেন গাজী। তাঁর শুরুটা যশোরের শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমি দিয়ে। সেখান থেকে দিলকুশা, ভিক্টোরিয়া ও আরামবাগ ক্লাব হয়ে পাঁচ বছরের মতো খেলেন রহমতগঞ্জের হয়ে। শতভাগ লোকাল খেলোয়াড়দের নিয়ে এবার প্রিমিয়ার লিগ শুরু করা আবাহনী এই গাজীর সৌজন্যে যাত্রাতেই পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেয়ে গেল। আবাহনীর হয়ে মৌসুমের প্রথম গোলটা করতে পেরে খুশি ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড, ‘মৌসুমের প্রথম ম্যাচ জেতার তৃপ্তিটা একটু ভিন্ন। আর সেই ম্যাচে গোল করতে পেরে আরও ভালো লাগছে।’
এনামুলের সঙ্গে এদিন স্কোরশিটে নাম লেখান জাফর ইকবাল। ম্যাচের যোগ করা মিনিটে পেনাল্টি থেকে আসে সেই গোল। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া এই ফরোয়ার্ড আবাহনীর হয়ে এবারই প্রথম মাঠে নামলেন। ৯ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময় মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন তিনি।
দিনের আরেক ম্যাচে মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ফর্টিস এফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ। এ ম্যাচেও প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধে অল্প সময়ের ব্যবধানে তিন গোল হজম করে ফর্টিস। বিপরীতে এক গোলের বেশি শোধ করতে না পারায় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ।