সমীকরণ ছিল জয় অথবা ড্র। নেপালের বিপক্ষে এর যেকোনো একটি হলেই সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার রাস্তা উন্মুক্ত হতো বাংলাদেশের যুবাদের। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ড্র করেছে তানভীর হোসেনরা। নেপালের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্রয়ে যুব সাফের ফাইনালের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ।
গত বছর মূল সাফে এই নেপালের সঙ্গেই ড্র করে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। দুই ড্রয়ের মাঝে ভীষণ ফারাক। এক ড্রয়ে কেঁদেছিলেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা। আরেক ড্রয়ে যুবাদের মুখে হাসি। ২০১৯ অনূর্ধ্ব-১৮ সাফের পর আবারও আরেকটি যুব ফাইনালের পথে লাল-সবুজের তরুণেরা।
নেপালের সঙ্গে ড্রয়ে চার ম্যাচে ১০ পয়েন্টে শীর্ষ দল হয়ে ফাইনালের টিকিট পেল পল স্মলির দল। সমান ম্যাচে নেপালের পয়েন্ট ৭। রাতে ভারত মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেলে ছিটকে যাবে নেপাল। আবারও আরেকটি ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। আর ভারত হেরে গেলে ফাইনালে আবারও নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।
ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে আজ ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ-নেপাল। আক্রমণাত্মক ভাবটা ভর করেছিল ফুটবলারদের খেলাটাও। ম্যাচে হাতাহাতিতেও জড়িয়েছেন দুই দলের ফুটবলাররা। দুই দলের ফুটবলারদের তিন লাল কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি সুমন হোসেন।
ম্যাচের ৯ মিনিটে প্রথম আক্রমণটা ছিল বাংলাদেশের। সতীর্থের বাড়ানো বল রফিকুল ইসলাম নাগাল পাওয়ার আগেই ছুটে এসে গ্লাভসে নেন নেপাল গোলরক্ষক ঈশ্বর গুরুং। ১৩তম মিনিটে নেপালি খেলোয়াড়ের ভুল হেড পাসে খেলার ধারার বিপরীতে সুযোগ পেয়েছিলেন রফিক, কিন্তু তার শট যায় সরাসরি গোলরক্ষকের কাছে।
একটু পরই নেপালি অধিনায়ক আয়ুশ ঘালানের শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে বাইরে গেলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ৩৩তম মিনিটে বক্সের একটু ওপর থেকে ডিপেস গুরুংয়ের বাঁকানো ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকান মোহাম্মদ আসিফ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বাংলাদেশ বক্সের বাইরে ফাউলকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই দলের ফুটবলাররা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাল কার্ড বের করতে হয়েছে রেফারিকে। বাংলাদেশের হয়ে লাল কার্ড দেখেছেন মিডফিল্ডার শহীদুল ইসলাম। নেপালের হয়ে লাল কার্ড দেখেন মিডফিল্ডার ডিপেস গুরুং ও সাইড বেঞ্চের আরেক ফুটবলার। হলুদ কার্ড দেখেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তানভীর হোসেন।
৫৮ মিনিটে আবারও সুযোগ আসে বাংলাদেশের। বক্সের ভেতর রফিকুলের দুর্বল শট ঠেকাতে অবশ্য কষ্ট হয়নি নেপালি গোলরক্ষকের।
কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য নেপালিদের রক্ষণ গেরো ভেঙে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন পিয়াস আহমেদ নোভা। নেপালি ডিফেন্ডারদের ভুলকে কাজে লাগিয়ে ৬৩ মিনিটে ডান প্রান্ত ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন রফিকুল ইসলাম। রফিকুলের কাটব্যাকে বল পান ফাঁকায় দাঁড়ানো পিয়াস। তাঁর মাটি কামড়ানো আড়াআড়ি শটে পরাস্ত হন নেপাল গোলরক্ষক।
পাঁচ মিনিট পরেই সমতায় ফেরে নেপাল। বক্সের বাইরে থেকে ৬৮ মিনিটে বদলি মিডফিল্ডার নিরঞ্জন মাল্লার জোরালো শট হার মানেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক আসিফ।
নেপালের সমতা ফেরানো পরের মিনিটেই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন রফিক। নেপালি গোলরক্ষককে একা পাওয়ার পরও বল জালে পোস্টে ঠেলতে পারেননি রফিক। ৮৫ মিনিটে বদলি মিডফিল্ডার মুর্শেদ আলীর কোনাকুনি শট নেপালি গোলরক্ষকের গ্লাভসে প্রতিহত হয়। ফাঁকায় দাঁড়ানো আরেক বদলি খেলোয়াড় নাজমুল হুদাও ঠিকভাবে নিতে পারেননি হেড।
৮৮ মিনিটে সেরা সুযোগটা নষ্ট করেছেন পিয়াস আহমেদ। মাঝমাঠ থেকে একাই বল পায়ে নেপালের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন পিয়াস, সামনে ছিলেন কেবল নেপালি গোলরক্ষক ঈশ্বর গুরুং। পিয়াসের শট ঠেকিয়ে দেন ঈশ্বর। পরের মিনিটে নাজমুল হুদাকেও গোলবঞ্চিত করেন ঈশ্বর। শেষ পর্যন্ত গোল পায়নি কোনো দলই। এক পয়েন্টেই ফাইনাল নিশ্চিত হয় যুবাদের।
খেলার খবর সম্পর্কিত আরও পড়ুন: