নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির মামলায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক ফউজুল আজিমের আদালত এই রায় দেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন-রাউজান থানার কোতোয়ালীঘোনা এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দীন।
মামলার এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, রাউজান থানার নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাট এলাকায় ছেলে শাহজাহান (১২), মেয়ে শাকিলা (৭) এবং ছেলে আজাদকে (৫) নিয়ে বিলকিছ আকতার বসবাস করতেন। তাঁর স্বামী সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। বিলকিছ আকতারের বড় বোনের জামাই জামাল উদ্দীন একই বাড়িতে পিতার ভিটায় ঘর তুলে ঘরজামাই হিসাবে বসবাস করেন। ১৯৯৪ সালে আসামি জামাল উদ্দীন আবুধাবি যাওয়ার সময়ে বিলকিছ আকতারের স্বামীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেন।
দুই বছর পরে দেশে ফিরে এসে ওই টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। বিলকিছ আকতারের ছোট ছেলে আজাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে থাকে জামাল। ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর বিকেলে বিলকিছ আক্তার ছেলে আজাদকে দেখতে না পেয়ে আশপাশে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে বিলকিছ আকতারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন জামাল।
এ ঘটনায় ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর বিলকিছ আক্তার তার বড়ভাই মো. ইউসুফ সওদাগরের মাধ্যমে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৯ সালের ১২ মে আসামি জামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া দেয় পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করেন আদালত।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পিপি জিকো বড়ুয়া জানান, ২৪ বছর আগে শিশু অপহরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে আদালতে। এই কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (বিশেষ বিধান) আইনে আসামি জামাল উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
স্পেশাল পিপি জিকো বড়ুয়া আরও জানান, এই মামলা প্রমাণ করতে মোট ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।