সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
প্রতিশ্রুতির মাঝেই সীমাবদ্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মধ্যম সোনাইছড়ি ত্রিপুরাপাড়ার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। ২০১৭ সালরে ১২ জুলাইয়ে হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে নয় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আলোচিত এ ত্রিপুরাপাড়ায় গভীর নলকূপ স্থাপন, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও রাস্তা মেরামতসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়নকাজের প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে বাসিন্দাদের মাঝে আশার আলো দেখা দিলেও ৪ বছরেও এসব বাস্তবায়ন হয়নি।
ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পর ত্রিপুরাপল্লিতে গভীর নলকূপ স্থাপনে কূপ খননের কাজ শুরু হয়। তবে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় সেই কাজ। এতে এ পাড়ার ৭০ পরিবারের লোকজনের ভোগান্তি কাটেনি।
সরেজমিনে মধ্যম সোনাইছড়ির ত্রিপুরাপাড়ায় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন মহিলা ঝরনার পানিতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হাঁড়ি-পাতিল ও থালা বাসন ধোয়ার কাজ করছেন। এ সময় তারা পরিষ্কার করা পাত্রে ছড়া থেকে দূষিত খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি সেখানেই গোসলের সেরে নিচ্ছেন।
কয়েকটি শিশুকেও পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নিচে নেমে ছড়ার দূষিত পানি পান করতে দেখা যায়। ছড়ার পানি ব্যবহার করায় এখনো তাদের পিছু ছাড়েনি রোগবালাই। তবে প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হয়েছে। তবে সেটি অধিকাংশ সময়ই থাকে বন্ধ।
পাড়ার সহকারী সর্দার কাঞ্চন ত্রিপুরা বলেন, সর্বশেষ পাড়ার একটু দূরে দুটি নলকূপ বসানো হয়। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে যায়। ভালো নলকূপ থেকে স্থানীয়রাই বেশি পানি সংগ্রহ করেন। তাঁদের জন্য পানি সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই পাড়ার বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে ছড়ার দূষিত পানিই নিত্য কাজে ব্যবহার করেন। এতে আবারও রোগ-বালাই বাড়ছে।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর জীবনমান পরিবর্তনে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
সীতাকুণ্ডের উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাশেদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ত্রিপুরাপাড়ায় গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য দুটি কূপ খননের পর পানি না পাওয়ায় কাজ ফেলে পালিয়েছেন ঠিকাদাররা।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করার পর তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী পাড়ার নিচের সমতল জায়গায় দুটি নলকূপ বসানো হয়। তবে তাঁর একটি বসানোর সপ্তাহখানেকের মধ্যে অকেজো হয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে এ বিষয়ে অবহিত হয়েছেন তিনি। ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার পর করণীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।