ঢাবি প্রতিনিধি
নির্দলীয় সরকার গঠন করে নির্বাচনসহ চার দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস। আজ শনিবার বিকেল থেকে ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য এ কর্মসূচি শুরু করেছেন তিনি।
চার দফা দাবিগুলো হলো—একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে; জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে; গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। সব নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাবি শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮-এর নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিকগণ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আবারও একই রকম একটি নির্বাচন সামনে হতে যাচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনর্বার ভূলুণ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে এই ডামি নির্বাচনের প্রতি নাগরিকদের কোনো আস্থা নেই। এই নির্বাচন বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। তাই আমি এই নির্বাচনকে বর্জন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি।’
আকাশ বিশ্বাস আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের নাগরিকেরা অব্যাহতভাবে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা গেস্টরুমে নির্যাতিত হচ্ছে, শ্রমিকদের মজুরির আন্দোলনে গুলি চালানো হচ্ছে; সর্বোপরি বাংলাদেশে একটা মানবাধিকার বিপর্যয় চলছে। এসব ঘটনার বিচার করতে হবে, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে এবং নাগরিকদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।’
রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে আকাশ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নয়; একজন সাধারণ বিবেকবান শিক্ষার্থী হিসেবে অবস্থান নিয়েছি। আশা করছি, শিক্ষার্থী ও বিবেকবান রাজনৈতিক সচেতন মানুষ আমার অবস্থানে সংহতি প্রকাশ করবেন।’
‘রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন, শিক্ষার্থী ও তরুণদের বিরাজনীতিকরণ করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এমন একটা রাষ্ট্র চাই যেখানে নাগরিকেরা নির্ভয়ে কথা বলতে পারবে। তাই রাজনৈতিক পরিসর সংকোচনের চক্রান্ত বন্ধ, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হিস্যা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে’—বলে উল্লেখ করেন এ শিক্ষার্থী।