নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ঢাকায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ৪১ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত পৃথক আদেশে বিভিন্ন মামলায় ৪১ জনকে জামিন দেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম ৩৬ জনকে ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান ৫ জনকে পৃথক মামলায় জামিন দেন।
সিএমএম আদালত থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রাজধানীর ওয়ারী থানার মো. আলী হোসেন ও মো. ইসমাইল তালুকদার, মিরপুর থানার ইমরান হোসেন, ইয়ামিন শেখ, সম্রাট খলিফা, মাসুদ পারভেজ, তুহিন, ইমরান আহম্মেদ ও জামির হোসেন, লালবাগ থানার মো. আ. কাদের ও নাহিদ আহমেদ, উত্তরা পূর্ব থানার মো. নাফিজ, তুরাগ থানার আসিফ খান, তানজিল হাসান ও আলিফ হাসান, সবুজবাগ থানার আ. সামাদ, শাহবাগ থানার এলাহী বক্স, আলাউদ্দিন, রায়হান ইসলাম, শিহাব হোসেন ও ফারদিন ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার অপু, মো. আসিফ ও মো. হেলাল, পল্লবী থানার ফয়সাল আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম ওয়াসিফ, রূপনগর থানার সামিউল আলম ও সাখাওয়াত হোসেন, চকবাজার থানার মো. আল আমিন, ধানমন্ডি থানার মাসুদ রানা, উত্তরা পশ্চিম থানার তাসরিফ স্বপ্ন, জাকি ওরফে তাহসিন, শাকিল আহম্মেদ, জাবের হোসেন ও রাহাত ওবায়দুল্লাহ এবং কদমতলী থানার সাব্বির হোসেনকে জামিন দেওয়া হয়।
অন্যদিকে সিজেএম আদালত থেকে সাভার থানায় গ্রেপ্তার সামির হোসেন ও ছোয়াদ উর রহমান, আশুলিয়া থানায় গ্রেপ্তার রনি শেখ ও রশিদুল ইসলাম তোহা এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার রুহুল আমিনকে জামিন দেওয়া হয়।
সরকারের তত্ত্বাবধানে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবারও বিশেষ আবেদন শুনানির জন্য আদালতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে এদিন দুপুরে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় , কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতা কিংবা নাশকতামূলক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ৩৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিনের শুনানি আজ বেলা সাড়ে তিনটায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অনুষ্ঠিত হবে। পরে আরও পাঁচজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিনের আবেদন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় আটক হওয়াদের মধ্যে যদি কেউ চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী থাকে, তারা পরীক্ষার প্রবেশপত্র, প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ জামিন আবেদন করলে তাঁদের জামিনে মুক্তিতে সরকার আইনি সহায়তা দেবে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যদি কেউ চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী থাকে, তারা পরীক্ষার প্রবেশপত্র, প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ জামিন আবেদন করলে তাদের জামিনে মুক্তিতে সরকার আইনি সহায়তা দেবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জামিনের সহায়তা করার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দেয়। ওই দিন তিনজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ঢাকার আদালত জামিন দেন।
গ্রেপ্তার ছাত্রদেরও জামিন বিবেচনার সিদ্ধান্ত
এদিকে চলমান আন্দোলন থামাতে গত কয়েক দিনে গ্রেপ্তার ছাত্রদেরও জামিন বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আটক যেসব ছাত্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নেই, তাদের জামিনের ক্ষেত্রেও সরকার আইনি সহায়তা প্রদান করবে।