নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আমরণ অনশন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকালেও রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাঁদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। গতকাল সোমবার থেকে তাঁরা এই কর্মসূচি শুরু করেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের দাবি অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ১২ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের কথা শোনা হচ্ছে না। দাবি আদায়ে বেকার এসব শিক্ষার্থী কর্মসূচি পালন করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসেন। বারবার আন্দোলন করতে রাজপথে নামতে চান না তাঁরা। তাই এবার প্রজ্ঞাপন নিয়েই বাড়ি ফিরবেন। প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা শাহবাগ ছাড়বেন না বলে জানান।
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৯টার দিকেও প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী আন্দোলন করছিলেন।
এদিন ৩৫ প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদের অন্যতম সংগঠক মো. হারুন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত কমিটি বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি সরকার। আমরা গত রোববার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। আমরা আর রাস্তায় থাকতে চাই না, পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা না হচ্ছে, আমরা শাহবাগ ছাড়ছি না। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ জন ৩৫ প্রত্যাশী অনশনে বসেছেন।’
এদিন সকালে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। দিনভর চলে তাদের আন্দোলন। এ সময় নানা স্লোগান দিতেন থাকেন তাঁরা। সেগুলোর মধ্যে—‘আর নয় কালক্ষেপণ, এবার চাই প্রজ্ঞাপন’, ‘৩২-৩৩ বুঝি না,৩৫ ছাড়া মানি না’, ‘২৪ এর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’। সন্ধ্যায় অনশন শুরু করেন বেশ কিছু আন্দোলনকারী।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০ বছর। বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা, কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবি একাধিকবার নাকচ করে দেয়। শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সেই দাবি ফের জোরালো হলে ৩০ সেপ্টেম্বর একটি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পর্যালোচনা কমিটির পক্ষ থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৫ ও নারীদের ৩৭ বছর করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এখনো পর্যালোচনা করছে সরকার।