রংপুর প্রতিনিধি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে রংপুরে মাঠে নামেননি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে কোথাও ভিড়তে পারেননি তাঁরা। হয়নি বিক্ষোভ প্রতিবাদও।
দুপুর থেকে মহানগরীতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রংপুর জিলা স্কুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেয় তারা। সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। বসানো হয় তল্লাশিচৌকি।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, শহরের বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, চেকপোস্ট, লালকুঠি মোড়, ডিসির বাংলোর সামনে, পায়রা চত্বর, শাপলা, মেডিকেল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশিচৌকি বসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোথাও বেঞ্চ দিয়ে, কোথাও ডিভাইডার দিয়ে তল্লাশিচৌকি করা হয়।
তল্লাশিচৌকি থেকে নগরীতে প্রবেশকারী মোটরসাইকেল, সাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) ডিসির মোড় থেকে নগর ভবন পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে কারফিউ শিথিল থাকায় নগরীতে জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি হওয়ায় অনেকেই বিপাকে পড়েন। বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়ে তল্লাশিচৌকিতে রিকশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন পাগলাপীর এলাকার ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ যেহেতু ফিরিয়ে দিচ্ছে। কোনো না কোনো কারণ তো আছে। তাই হেঁটেই রওনা দিয়েছি। মেডিকেল মোড়ে গিয়ে বাড়ি যাওয়ার বাস ধরব।’
গঙ্গাচড়ার বাসিন্দা রিকশাচালক আশেক আলী আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই গোলযোগের জন্য কামাই কমি গেইছে। ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়া বেটিক বিয়াও দিছি। সেই টাকার কালকে (মঙ্গলবার) কিস্তি আছে। সারা দিনে ৩০০ টাকা কামাই হইল। এই গোলযোগ না থাকলে কিস্তির টাকা কামাই করিয়াও সংসার খরচের টাকাও থাকিল হয়। কদ্দিন এই গোলযোগ শেষ হইবে, তাক আল্লাহ জানে। সাতজনের সংসার নিয়া খুব কষ্টে আছি।’