ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক জহুরুল ইসলামের লাশ তিন দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁঠালডাঙ্গী সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে লাশ ফেরত দেওয়া হয়।
৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ কাঁঠালডাঙ্গী কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার এমতাজুল হক এসব তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করে বলেন, পতাকা বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে লাশ হস্তান্তর করা হয়। পরে হরিপুর থানা-পুলিশ নিহত জহুরুলের স্বজনদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে। পরিবারের পক্ষে নিহতের বড় দুই ভাই আব্দুল গফফার ও আব্দুল বারেক মরেদহটি গ্রহণ করেন।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় বিএসএফ ও বিজিবি সদস্য ছাড়াও ভারতের গোয়াল পুকুর থানা–পুলিশ ও হরিপুর থানা–পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
গেদুড়া ইউপি চেয়ারম্যার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, জহুরুলের স্ত্রী ও দুই বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তিনি ভারতীয় গরু পারাপার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জহুরুল গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের আবদুল বাছেদের ছেলে। তিনি একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে মিলে গরু পারাপারের জন্য গত সোমবার ভোরে ভারতে প্রবেশ করেন।
এ সময় বিএসএফের গুলিতে দুজন আহত হন। মোখলেছুর নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বাংলাদেশ অংশে চলে আসেন। জহুরুলকে বিএসএফ সীমান্তের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ওইদিন সকালে গ্রামবাসী মোখলেছুর রহমানের নিথর মরদেহ উদ্ধার করে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, মোখলেছুরকে গত বুধবার গেরুয়াডাঙ্গী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জহুরুলের ভাই আব্দুল বারেক বলেন, ‘বিকেলে পুলিশ আমাদের কাছে জহুরুলের লাশ হস্তান্তর করার পরপরই বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে গেরুয়াডাঙ্গী প্রাইমারী স্কুলের পেছনে এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।’
এদিকে ছেলেকে হারিয়ে জহুরুলের মা মোছা. রঙফুল কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘আমি এখন কী নিয়া বাঁচব। বারবার তারে বলছি সীমানার মধ্যে না ঢুকতে, আজ আমার বাবাটারে মেরে ফেলল ওরা।’