ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অধীনে গাছ বিক্রি করা হলেও অর্ধশতাধিক উপকারভোগী নিজেদের ভাগের টাকা পাননি। তাঁদের অভিযোগ, এক বছর আগে গাছগুলো নিলামে বিক্রি করা হলেও তাঁদের পাওনা দেওয়া হচ্ছে না।
উপকারভোগীদের অভিযোগ, ২০১২ সালে ঠাকুরগাঁও সদরের বড় খোঁচাবাড়ী থেকে ২৯ মাইল কদমতলী এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির ১০ হাজার গাছ রোপণ করেন ৫০ জন উপকারভোগী। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন বিভাগ নিলামের মাধ্যমে গাছগুলো ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার ২৯০ টাকায় বিক্রি করে। নিয়ম অনুযায়ী, বিক্রি করা টাকার ৫৫ ভাগ উপকারভোগীদের পাওয়ার কথা। তবে বন বিভাগের প্লট বরাদ্দ পাওয়া উপকারভোগীরা জানান, নিলামে গাছ বিক্রির এক বছর অতিবাহিত হলেও তাঁরা কেউ এখনো কোনো টাকা পাননি।
উপকারভোগী আব্দুল মতিন অভিযোগ করেন, প্রায় ১২ বছর ধরে হতদরিদ্র অর্ধশতাধিক মানুষ রাত-দিন কষ্ট করে পরিচর্যার মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন বাস্তবায়ন করেছেন। এখন গাছ নিলামে বিক্রির পরও তাঁরা নিজেদের টাকা বুঝে পাচ্ছেন না।
আরেক উপকারভোগী সারোয়ার হোসেন বলেন, বনের বিক্রি করা গাছ কাটার পর আবার নতুন করে বনায়ন করা হয়েছে। সেগুলোও তারা দেখভাল করছেন। কিন্তু গাছ বিক্রির প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁরা টাকা বুঝে পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপকারভোগী বলেন, গাছ লাগানোর শুরু থেকে এ পর্যন্ত বন কর্মকর্তা বিভিন্নভাবে প্রতি সদস্যের কাছ থেকে ৫-৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। সেই টাকার কোনো রশিদ তিনি দেননি।
সাদেকুল ইসলাম নামের আরেক সদস্য বলেন, ‘সন্তানদের নিয়ে দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও রাত-দিন বাগানের যত্ন নিয়েছি। আশা ছিল বাগানের বিক্রির টাকায় একটি গরু কিনব। কিন্তু তা আর হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিউল আলম মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সদরের বড় খোঁচাবাড়ী থেকে কদমতলা পর্যন্ত বন বিভাগের নিলাম হওয়া গাছের বাগান বিক্রির দুই বছর আগে কিছু গাছ কাটা হয়েছিল। ওই গাছগুলোর দুটি লট দরপত্রে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় সেগুলো এখনো অবিক্রীত পড়ে আছে। অবিক্রীত গাছগুলো বিক্রি হলে উপকারভোগীদের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।