তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। বেশির ভাগ সময়ই কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে এই অঞ্চলে। কয়েক দিনের টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় হিমালয়ের হিমশীতল বাতাস ৷ চারপাশ আচ্ছাদিত থাকে ঘন কুয়াশায়। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো শিশির পড়ে, যা অব্যাহত থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো কোনো দিন সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ তেমন মেলে না। তবে সূর্যের উত্তাপ যতটুকু কাজে লাগানো যায়, সেটুকু কাজে লাগিয়ে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কনকনে শীতে হতদরিদ্র ও শীতার্ত মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, মূলত হিমালয়ের হিমশীতল বাতাস বয়ে যাওয়ার কারণে তাপমাত্রা ওঠানামা করে এই জেলায়। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তবে তাপমাত্রা আরও কমবে এবং শীতের প্রকোপ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।
এ বিষয়ে মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে আসা পাথরশ্রমিক নকিবুল ইসলাম বলেন, ‘কনকনে শীতের কারণে আমরা কাজকর্ম তেমন করতে পারছি না। শীতের কারণে নদীর পানি অনেক ঠান্ডা। তবু জীবিকার তাগিদে নদীতে কাজ করতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে চা-শ্রমিক মহসিন আলী বলেন, ‘কাজ না করলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়। এত শীতেও কেউ আমাদের খোঁজখবর নেয় না। যদি এই মুহূর্তে কোনো শীতবস্ত্র পেতাম, তাহলে অনেক উপকার হতো।’
এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে এ মাসের শেষের দিকে এবং শীতের প্রকোপও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অন্যান্য উপজেলার তুলনায় এ উপজেলায় বেশি শীত অনুভূত হয়। আমরা শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। মূলত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে ৷ শীতবস্ত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। শীতার্ত মানুষের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত থাকবে।’