নীলফামারী প্রতিনিধি
গত পাঁচ দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে নীলফামারীতে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় নীলফামারীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। কুয়াশায় বিঘ্ন ঘটছে উড়োজাহাজ চলাচলেও।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৯৫ শতাংশ। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে বেলা ১১টায় এই অঞ্চলে দৃষ্টিসীমা ছিল মাত্র ১০০ মিটার।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টা এই অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া সপ্তাহের শেষে রংপুর বিভাগের কয়েক জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগ বেড়েছে এই অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের। গত মঙ্গলবার থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলেছে কমই। শীতের তীব্রতার হাত থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছে মানুষ। গবাদিপশুরও কষ্ট হচ্ছে। চট বা বস্তা দিয়ে তাদের শরীর ঢেকে রাখছেন মালিকেরা।
নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের সামনে ইজিবাইকচালক রশিদুল ইসলাম বলেন, মাসিক চুক্তিতে প্রতিদিন দিনাজপুরের খানসামা থেকে চার নারী শ্রমিককে ‘ইপিজেডে আনা-নেওয়া করি। চুক্তিবদ্ধ না হলে এই শীতে ইজিবাইক সড়কে বের করতাম না। সকালের কুয়াশায় ১০ গজ দূরের বস্তুও দেখা যাচ্ছে না।’
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে চলাচলকারী রাত্রিকালীন কোচগুলো যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। নীলফামারীর ডিমলার হানিফ পরিবহনের কাউন্টার এজেন্ট দীপঙ্কর রায় আজকের পত্রিকাকে জানান, বগুড়ার পর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে চালক দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ির গতিবেগ রেখেছেন ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। ফলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কোচগুলো উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছাচ্ছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর ম্যানেজার সুপ্লব কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সকালের তিনটি ফ্লাইট সূচি অনুযায়ী ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করেনি। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারের ফ্লাইট রয়েছে। এসব ফ্লাইটের ঢাকাগামী দুই শতাধিক যাত্রী সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবস্থান করছে। কুয়াশা কেটে গেলে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হবে। তবে এ পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ আজকের পত্রিকাকে জানান, ইতিমধ্যে জেলার ছয়টি উপজেলায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগে এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। শীতার্তদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দের জন্য নতুন করে আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে।