হোম > ছাপা সংস্করণ

গ্রামের রাস্তায় সৌরবাতি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮: ১৭

আগে সন্ধ্যা নামলে ঘরের বাইরে বের হতে ভয় পেতেন ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চলের মানুষ। রাতে হারিকেনের আলো ছিল তাঁদের একমাত্র ভরসা। গ্রামীণ জনপদে এখন সেই দৃশ্য বদলে গেছে। রাস্তায় সৌরবাতি পৌঁছে গেছে গ্রামে গ্রামে। এতে আলোকিত হচ্ছে রাস্তাঘাট।

ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সৌরবাতির আলোয় অন্ধকার কেটেছে গ্রামগুলোতে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে সোলার স্ট্রিট লাইট। যা সারা দিন সূর্যের আলো সঞ্চয় করে রাতে আলোকিত করছে গ্রামীণ জনপদ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আর এতে নিরাপদে চলাফেরা করছেন এলাকার মানুষ। কমেছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা।

সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামের কুলিম চন্দ্র রায় বলেন, ‘আগে সন্ধ্যা হলে ভয়ে বাজার থেকে বাড়ি চলে আসতাম। অন্ধকার রাতে হারিকেনের আলোয় পথ চলতে হতো। এখন এসবের কিছুই লাগে না। রাস্তাগুলো এখন দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার দেখা যায়।’

খোঁচাবাড়ী কোণপাড়া এলাকার স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেন বলেন, গ্রামের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন করায় বিদ্যালয়ে এখন আর চুরির ভয় থাকে না। একসময় অন্ধকারে স্কুলের বারান্দায় মাদক সেবন করত বহিরাগতরা। এখন তাদের উপদ্রব কমে গেছে। এলাকার মানুষও রাতে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারেন।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের এনতাজউদ্দিন বলেন, ‘আগে কেরোসিনের তেল না থাকলে অন্ধকার ঘরে থাকতে হতো। এখন কোনো বিদ্যুতের খরচ নাই, ঝামেলা নাই সন্ধ্যা হলে ঘরের ভেতরে জ্বলে উঠছে আলো।’

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখার উচ্চমান সহকারী নাজির হোসেন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় জেলার ৫৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তিন হাজার সৌরবিদ্যুতের বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির ও স্থানীয় গ্রামীণ হাটবাজারগুলোতে বসানো হয়েছে স্ট্রিট ও হোম লাইট। সব শেষে কাবিখা ও টিআরের নামে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে হোম সোলার ও স্ট্রিট লাইট জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে। এ দুটি প্রকল্পের সুবিধাভোগী সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ২৬ জন।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার ৯০ শতাংশ এলাকায় সৌরবিদ্যুতের আলো পৌঁছে গেছে। সৌরবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ দাবি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

সৌরবিদ্যুতের প্রকল্পটি বিদ্যুতের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করছে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু আশরাফ মোহাম্মদ ছালেহ। তিনি আরও জানান, জেলার ৯১১টি গ্রামেই এখন বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদার রয়েছে ৬৪ মেগাবাইট এবং বরাদ্দও পাওয়া যাচ্ছে ৬৪ মেগাবাইট। কিন্তু এ বরাদ্দের মধ্যেও অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে সৌরবিদ্যুতের কারণে লোডশেডিংয়ে বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় কাজগুলো সহজে সেরে নেওয়া যায়। সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছেন কৃষকেরা।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমানে শহরের সব সুবিধা পর্যায়ক্রমে পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, সড়কবাতিসহ নাগরিক সব সুবিধা পৌঁছে দিতে কাজকরা হচ্ছে।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

সেকশন