মাত্র এক দিন আগেই ‘গত’ হওয়া বছরটা ছিল টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশ দলের সেরা বছর। ওয়ানডে সংস্করণে বছর ভালো না গেলেও দারুণ কেটেছে টেস্ট সংস্করণেও। বিদায়ী বছরে ৪ টেস্ট খেলে ৩টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ, হার মাত্র ১টিতে। জয়ের হার ৭৫ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি সাফল্যের হার বাংলাদেশের ২৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে কখনোই ছিল না।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ১৩টি বছর আছে, যেগুলোয় একটি টেস্টও জেতেনি বাংলাদেশ দল। উন্নতির সূচকে ২০২৩ সালটা ভালো অবস্থানেই থাকবে। ২০২৪ সালে সেই ছন্দ ধরে রাখার ভালো সুযোগ পাচ্ছে তারা। বলা যায়, এ বছরটা শান্ত-মুমিনুলদের ‘টেস্টের বছর’। এ বছর ৭টি সিরিজে মোট ১৪টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এ বছর ইংল্যান্ড (১৭) ও ভারতই (১৫) শুধু তাঁদের চেয়ে বেশি টেস্ট খেলবে। এটি হবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টেস্ট খেলার বছর। এর আগে ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ১০টি টেস্ট খেলেছিল তারা।
টেস্ট ক্রিকেট আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্র চালু করেছে আইসিসি। প্রথম দুই চক্রে বাংলাদেশ দলের অবস্থান ছিল পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে। আগের চক্রের মতো ২০২৩-২৫ চক্রেও বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২ টেস্টের সিরিজ ড্র করে চক্র শুরু করেছে বাংলাদেশ।
২০১৯-২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রের ৭ টেস্টে শুধু ১টি ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ২০২১-২৩ দ্বিতীয় চক্রে ১২ টেস্টে ১টি করে ম্যাচ জয় ও ড্র করেছে তারা। ২০২৪ সালকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার বছর হিসেবে দেখছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুমিনুল হক। নিয়মিত লাল বলের এই তারকা ক্রিকেটার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এতগুলো টেস্ট খেলব, আমার কাছে মনে হয়, ভালো একটা সুযোগ পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের ওপরে নিয়ে যাওয়ার। সুযোগ এ জন্য দেখি, আমরা এক বছরে এতগুলো টেস্ট এর আগে খেলিনি।’
এ বছর ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৩টি টেস্ট সিরিজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ আর শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৩টি টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। নিজেদের কন্ডিশনে ভালো কিছু করার সুযোগও বাংলাদেশ বেশি পাচ্ছে এবার। জয় দিয়ে নতুন চক্রের শুরু হওয়ায় দল আত্মবিশ্বাসী বলে মনে করেন মুমিনুল, ‘গত বছর দুটি টেস্ট সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতার পর দল এই ফরম্যাটে ভালো অবস্থায় আছে। ফলের কথা বেশি চিন্তা না করে যদি সুযোগ হিসেবে নিই, র্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের আরও ওপরে নিয়ে যাওয়ার তাহলে সহজ হবে ভালো করতে।’
বিসিবির নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন এ বছরে যেমন সুযোগ দেখছেন, তেমন ফিটনেসের দিক দিয়েও চ্যালেঞ্জিং মনে করেন। এই বছর সাদা বলে অন্তত ২৬ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। জুনে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সব বিবেচনায় রেখে সুমন বললেন, ‘আগের দুই চক্রে আমরা ভালো করিনি। তবে নতুন চক্রে জয় দিয়ে শুরু করেছি। জয় সব সময় ভালো কিছুর স্বাক্ষর। তবে বছরটা খেলোয়াড়দের শারীরিক চ্যালেঞ্জেরও হবে, এত বেশি খেলা। হোমে যেহেতু ম্যাচ রয়েছে, আশা করছি পয়েন্ট বাড়িয়ে নিতে পারবে তারা।’