হোম > স্বাস্থ্য > স্বাস্থ্য টিপস

যে কারণে নারীদের ওজন বাড়ে

ইতি খন্দকার

কম খাচ্ছেন, না খেয়ে থাকছেন। অনলাইন ঘেঁটে এক মাসের মধ্যে ৮ থেকে ১০ কেজি ওজন কমে যাবে, সেসব ডায়েট মেনে চলছেন। কিন্তু আপনার ওজন কোনোভাবেই কমছে না। এর কারণ খুঁজে হয়রান হচ্ছেন?

বর্তমানে এ ধরনের সমস্যা বেশ সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা দূর করতে হলে আগে জানতে হবে, ওজন না কমার কারণ কী, শরীরে কোনো সমস্যা আছে কি না, যা খাচ্ছেন তা শরীরের জন্য সঠিক কি না, ইত্যাদি বিষয়। না বুঝে কোনো ডায়েটে আসক্ত না হয়ে অভিজ্ঞ একজন ডায়েটেশিয়ান অথবা নিউট্রিশনিস্টের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।

অনিয়ন্ত্রিত ওজন বাড়ার বিভিন্ন কারণ থাকলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পিসিওএস ও থাইরয়েডের সমস্যা।

পিসিওএস হলো নারীদের হরমোনসংক্রান্ত একটি জটিল সমস্যার নাম, যা প্রজননক্ষমতায় মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। এটি মূলত অনেকগুলো অস্বাভাবিক লক্ষণের সমন্বয়, যা নারীর ডিম্বাশয় তথা প্রজননতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। পলিসিস্টটলিক হচ্ছে অনেকগুলো সিস্ট বা তরলে পূর্ণ ছোট ছোট থলের মতো অংশ, যা ডিম্বাশয়জুড়ে থাকে। এই থলেগুলো, অর্থাৎ ফলিকলগুলো এক একটি অপরিপক্ব ডিম্বাণু বহনকারী। কিন্তু প্রয়োজনীয় হরমোনের অভাবে তা আর পরিণত হতে না পেরে সিস্ট আকারে জমতে থাকে। এর ফলে শরীরে অ্যান্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়, যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য দায়ী।

নিয়ন্ত্রণের উপায়

  • নিয়মিত লাইফস্টাইলকে একটি গোছানো রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
  • অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ওজন বাড়ার সঙ্গে সিস্ট বাড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়, অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন অংশে চর্বি জমে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এর জন্য নারীদের মাসিক অনিয়মিত হতে দেখা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ১০ শতাংশ ওজন কমানোর মাধ্যমে পিসিওএস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে।
  • দৈনিক খাবারের তালিকা সুনির্দিষ্ট হতে হবে, অর্থাৎ দুই-তিন ঘণ্টা পর পর অল্প পরিমাণ হলেও কিছু খেতে হবে।
  • নিয়মিত চেকআপ করতে হবে। পিসিওএস হলে মেটাবলিক সিনড্রোম দেখা দেয়। এটি পরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

 

পিসিওএসে খাবারের তালিকা

  • ফলিক অ্যাসিড: খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে ফলিক অ্যাসিড। প্রজননক্ষমতা বাড়াতে এটি খুবই কার্যকরী। পালংশাক, কলমি, সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, বাঁধাকপি, ডিম, বাদাম, পনির এগুলোয় ফলিক অ্যাসিড থাকে।
  • উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার: ফলের ক্ষেত্রে শুকনো ডুমুর, আমড়া, পেয়ারা, সবুজ আপেল, কলা রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। শাকসবজির ক্ষেত্রে কচুশাক, মিষ্টি আলুশাক, পুদিনাপাতা, পুঁইশাক, মুলা, ডাঁটাশাক, লাউ ও মিষ্টিকুমড়া শাকের ডগার অংশ রাখতে হবে। এ ছাড়া সবজির ক্ষেত্রে শজনে, করলা, ঢ্যাঁড়স, ডাঁটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, পটোল, কচু, বেগুন, বরবটি ও মটরশুঁটি রাখতে পারেন।
  • আমিষ: উচ্চ আমিষসমৃদ্ধ খাদ্য খুবই উপকারী পিসিওএসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য। যেমন মুরগি, মাছ, বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক খাবার, দই, ডাল ইত্যাদি।
  • লো কার্ব: যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুবই কম, তা খাবারের তালিকায় রাখতে হবে। তবে শর্করা কোনোভাবে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
  • পানি পান: প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ গ্লাস পান করতে হবে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানিতে ১ চা-চামচ পরিমাণ দারুচিনির গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে দীর্ঘদিন এটি খাওয়া যাবে না।
  • চেষ্টা করবেন সপ্তাহে দুই দিন হলেও ডাবের পানি খেতে।
  • খাবারের তালিকায় আরও একটি স্বাস্থ্যকর খাবার যুক্ত করতে পারেন, ২ টেবিল চামচ টক দই, ৩ থেকে ৪টি বাদাম, ছোট আকারের ১টি কলা, ১ টেবিল চামচ ভেজানো চিড়া এবং ১ চা-চামচ পরিমাণ মধু। সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে কিংবা চামচ দিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন।

যেসব খাবার খাওয়া যাবে না

  • গরুর দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। গরুর দুধের বদলে নারকেলের দুধ, বাদাম দুধ কিংবা সয়াবিনের দুধ খেতে পারেন।
  • প্রসেস ফুড, মিষ্টি ও ট্রান্সফ্যাটজাতীয় খাবার, টেস্টিং সল্ট, খাবারে বাড়তি লবণ বাদ দিতে হবে।

লেখক: পুষ্টিবিদ, লেজার ট্রিট ক্লিনিক, বনানী

সবুজ জুসে সুস্থ থাকুন

পেটের সমস্যা দূরে ঘরোয়া উপাদান

চশমা নিয়ে ভুল ধারণা

বিড়ালের কামড়েও বিপদ হতে পারে

খাবারে প্রতিক্রিয়া মানেই অ্যালার্জি নয়, ফুড অ্যালার্জি বুঝবেন যেভাবে

গরমে বাড়তি যত্ন

হিট স্ট্রোক বুঝবেন কীভাবে, প্রাথমিক চিকিৎসা কী

গরমে গায়ে র‍্যাশ ও চুলকানি, প্রতিকার জেনে নিন

অ্যাজমা বা হাঁপানিতে যা মনে রাখবেন

তোকমার ৯ স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

সেকশন