অনলাইন ডেস্ক
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই গাজার পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত ইসরায়েলি সেটলার বা বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী ও ব্যক্তিদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
পশ্চিম তীরে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের অভিযোগে ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় জো বাইডেন। তাঁর সেই নির্বাহী আদেশটি গতকাল সোমবার বাতিল করেন ট্রাম্প।
ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া ওই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের মার্কিন সম্পদ জব্দ হয় এবং আমেরিকানদের সঙ্গে তাঁদের লেনদেন নিষিদ্ধ হয়।
বর্তমানে বিশ্বের নজর গাজা যুদ্ধের দিকে থাকলেও পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ও ভূমি দখলের ক্রমবর্ধমান ঘটনা ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
বাইডেন প্রশাসন বহুবার ইসরায়েলি সরকারকে বসতি স্থাপনকারী চরমপন্থীদের দমনের আহ্বান জানিয়েছিল। ওয়াশিংটনের মতে, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের আশা নষ্ট করছে এই চরমপন্থীরা।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। এই অঞ্চলকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রের মূল অংশ হিসেবে চায়। সেই জায়গায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে ‘অবৈধ’ বলে মনে করে অধিকাংশ দেশ। তবে ঐতিহাসিক ও বাইবেলের সূত্র দেখিয়ে বরাবরই এ দাবি অস্বীকার করে এসেছে।
এবিষয়ে ট্রাম্পের নীতি বাইডেনের চেয়ে ভিন্ন। ২০১৯ সালে প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে এসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘বসতিগুলো অবৈধ নয়।’ কিন্তু পরে বাইডেন বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ ও প্রধান বসতি স্থাপনকারী সংগঠন ‘ইয়েশা কাউন্সিলের’ চেয়ারম্যান ইসরায়েল গ্যানজ গত বছরের অক্টোবরে রয়টার্সকে জানান, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এসে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন বলে তিনি আশাবাদী। তাঁর এই আশা এবার পূরণ হল। কিন্তু পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ও ভূমি দখলের ক্রমবর্ধমান ঘটনা গাজায় নতুন এক সংকটের জন্ম দিচ্ছে।