হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

আবার সন্ত্রাসের আশঙ্কা

সম্পাদকীয়

ঢাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময়ে মানুষ হত্যাসহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত থাকার অপরাধে কারাগারে বন্দী ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের পর একে একে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেতে শুরু করেন। তাঁরা বের হওয়ার পর আবার একই অপকর্মে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে নগরবাসীর মধ্যে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ১৯ জানুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার প্রায় ২৭ জন সন্ত্রাসী জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মিরপুরের কিলার আব্বাস ওরফে আব্বাস আলী, শাহাদত হোসেন, মুক্তার, শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগের সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন, খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসু।

কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেই তাঁরা নিজেদের হারানো সাম্রাজ্য আবার নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্রিয় হয়েছেন। এই সন্ত্রাসীরা আবার তাঁদের অপরাধের জাল বুনতে শুরু করেছেন। আর এই কাজে তাঁদের সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। চাঁদাবাজি, দখলবাজি, হুমকি-ধমকি এখন নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে।

আমাদের দেশের কারাগারগুলো সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে ওঠার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। কারাগারের ফটকে লেখা থাকে—‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’। এই স্লোগানটিও যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এ দেশে সন্ত্রাসীরা কারাগারে বন্দী থাকার পরে মুক্তি পেয়ে আবার দ্বিগুণভাবে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। কারণ, কারা অভ্যন্তরে থাকাকালীন যে পরিবেশের মধ্য দিয়ে তাঁরা সময়গুলো পার করেন, তাতে তাঁদের মধ্যে অপরাধের জন্য ন্যূনতম অনুশোচনা বোধ জাগে না। কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাঁদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন না। সেখানে খাবারসহ আনুষঙ্গিক যে সুবিধাগুলো পাওয়ার কথা, সেসবের কিছুই তাঁরা পান না।

কারাগারের আইনগুলো ব্রিটিশ আমলের। এ সময়ে সেগুলোর পরিবর্তন করে যুগোপযোগী করার দরকার হলেও তা করা হয়ে ওঠেনি। তাই কারাগারগুলো এখনো সংশোধনাগার হয়ে ওঠেনি। এগুলো প্রকৃতভাবে সংশোধনাগার হয়ে উঠলে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনেকাংশে কমে যেত। সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয় না। ফলে তাঁরা কারাগার থেকে বের হওয়ার পর আয়ের ব্যবস্থা না থাকার কারণে আবার পুরোনো পেশায় ফিরে যেতে বাধ্য হন।

‘পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়’—সমাজে এ কথাটিরও যথার্থ প্রয়োগ দেখা যায় না। এ কারণে একজন সন্ত্রাসী কারাগার থেকে বের হয়ে সমাজের মানুষের কাছে ভালো ব্যবহার পান না। ফলে তাঁরা সন্ত্রাসী পেশাকে বাঁচার অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করেন।

ঢাকা শহর যেন আবার সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিগণিত না হতে পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। তাঁদের কোনোভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া যাবে না এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। জনগণকেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

ফ্যাসিবাদ নিয়ে কথা

ঘোষণাপত্র নিয়ে মতপার্থক্য

সন্ত্রাসী!

নির্বাচনবিষয়ক ভাবনা

সংবিধান সংস্কার

ভুল ও ভোগান্তি

বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব

সহিংসতা হয়নি তা নয়

রিওভাইরাস: সচেতনতা জরুরি

চালের বাজারে অস্থিরতা

সেকশন