অনলাইন ডেস্ক
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের হিসাবে পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী কুমড়াটির ওজন ১ হাজার ২২৬ কেজি বা ২ হাজার ৭০২ পাউন্ড। ওজনে একটি ছোটখাটো কারের চেয়ে বড়। আরও সহজে বুঝতে চাইলে এর ওজন মোটামুটি ১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সমান। ইতালির একজন কৃষক এই কুমড়া উৎপাদন করেন।
ইতালির টোসকানোর রাদ্দা ইন চিয়ানতি অঞ্চলের কৃষক স্টেফানো কুতরোপি ২০০৮ সাল থেকেই এমন বিশাল আকারের কুমড়া উৎপাদন শুরু করেন। পিসার ধারে অবস্থিত পেসিওলিতে কামপেয়োনাতো দেলা জুকোনে নামের এক কুমড়া উৎসবে ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রথম কুমড়াটি প্রদর্শন করেন তিনি।
লো জুকোনে নামেও পরিচিত উৎসবটিতে বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন গ্রেট পাম্পকিন কমনওয়েলথের সদস্যরা। তাঁরাই ঠিক করেন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উপযোগী কি না কুমড়াটি।
তবে পৃথিবীতে এখন এত দানবীয় সব ফল আর সবজি উৎপাদিত হয় যে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। তা ছাড়া জিনিসটি পাড়ার পর থেকে প্রতিযোগিতায় পৌঁছানো পর্যন্ত সময়টি ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তারপর এল প্রতিযোগিতার দিন। অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। তেমনি কৌতূহলী ছিলেন উপস্থিত দর্শকও।
‘যখন ওজন করা হচ্ছিল, আমার পেছনটি ছিল পর্দার দিকে। যখন দর্শক আর আমার বন্ধুবান্ধব দেখল ওজনটা, আনন্দে আমাকে তুলে ফেলল তারা। ঠিক সেই মুহূর্তে বুঝতে পারলাম আমি এটা করেছি। চেঁচিয়ে উঠলাম।’ বলেন কুতরোপি, ‘কুমড়াটি ছুঁতেই শরীরে যেন উত্তেজনার একটি শিহরণ বয়ে গেল। নতুন বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছি।’
মজার ঘটনা, প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার (যেটি আবার বিশ্ব রেকর্ডও) পাওয়ার পাশাপাশি লো জুকোনে উৎসবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারও পান তিনি। দ্বিতীয় হওয়া তাঁর কুমড়াটির ওজন ছিল ৯৭৮.৯৯ কেজি (২১৫৮ পাউন্ড), আর তৃতীয় হওয়াটির ওজন ৭৯৪.৫১ কেজি (১৭৫১ পাউন্ড)।
ওই প্রতিযোগিতার দুই সপ্তাহ পর কুতরোপির বিশাল কুমড়াটা পৌঁছে জার্মানির লুডউইগসবার্গে। ১০ অক্টোবর ইউরোপিয়ান জায়ান্ট পাম্পকিন চ্যাম্পিয়নশিপে এর ওজন মাপা হয়। এখানে একটি বিষয় খোলাসা করা দরকার, খেত থেকে তোলার পর অভ্যন্তরে পানি হ্রাসের কারণে কুমড়ার ওজন কমতে থাকে। এই কয় দিনে এর ওজন একটু কমে দাঁড়ায় ১২১৭.৫ কেজিতে (২,৬৮৪ পাউন্ড)। তবে এতে এই প্রতিযোগিতায়ও এর প্রথম স্থান অর্জন বাধাগ্রস্ত হয়নি। আর ২০১৬ সালের পুরোনো বিশ্ব রেকর্ড থেকে তখনো এর ওজন ছিল অনেক বেশি। আগের ওই রেকর্ডটি ছিল বেলজিয়ামের ম্যাথিয়াস উইলমিজনসের ১১৯০.৪৯ কেজি ওজনের কুমড়াটির।
গত দেড় বছরে অবশ্য কুতরোপির রেকর্ড ভাঙতে পারেননি আর কেউ, এমনকি তিনি নিজেও।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস