নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কফিনবন্দী হয়ে প্রাণের শহর চট্টগ্রামের মাটিতে মঙ্গলবার রাতে পৌঁছায় নারীনেত্রী, শহীদজায়া ও উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি বেগম মুশতারী শফীর মরদেহ। আজ বুধবার সকাল ৯টায় তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শেষবারের মতো এই মহীয়সী নারীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। সেখানে গার্ড অব অনার দেবে সিএমপির একটি চৌকস দল।
মুশতারী শফীর প্রতি স্মৃতিচারণ করেন কবি আবুল মোমেন, চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, অধ্যাপক বেণু কুমার চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বালাগাত উল্লাহ, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, প্রমার সভাপতি রাশেদ হাসান প্রমুখ।
একে একে শ্রদ্ধা জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবসার, নারীনেত্রী নূরজাহান খান, প্রফেসর রীতা দত্ত, নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, লেখিকা আনোয়ারা আলম, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ডা. চন্দন দাশ, শীলা দাশগুপ্ত, কবি আশীষ সেন, রাশেদ হাসান, রমেন দাশগুপ্ত, প্রণব চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়া শ্রদ্ধা জানায় উদীচী, কমিউনিস্ট পার্টি, সনাক, বোধন, প্রমা, খেলাঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন।
তিনি বলেন, আমাদের সভাপতিকে হারিয়ে আমরা উদীচী পরিবার খুবই ব্যথিত। প্রগতিশীল সংস্কৃতি অঙ্গনের এই অভিভাবককে হারিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রগতিশীল সংস্কৃতি অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, সেটা কখনোই পূরণ হবার নয়। বেগম মুশতারী শফী দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার বেগম মুশতারী শফী দেশে প্রগতিশীল চেতনার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অনন্য ভূমিকা পালনের জন্য তাঁকে বাংলা একাডেমি কর্তৃক ২০১৬ সালে ‘ফেলোশিপ’ প্রদান করা হয়। গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম মুশতারী শফী মারা যান। ৮৩ বছর বয়সী বেগম মুশতারী শফী দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। এ ছাড়া বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগও ছিল। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য স্বজন রেখে গেছেন।