নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ২০ জনকে।
চট্টগ্রামে প্রেসক্লাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাঁধায় আজ শনিবার ৩টায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে পারেননি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। পরে তাঁরা মোমিন রোডে চেরাগি পাহাড় মোড়ে এসে জড়ো হন। সেখানে বিকেল ৪টায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
প্রেসক্লাবে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও এপিবিএনের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল। সাড়ে ৩টার দিকে ৩০-৪০ জনের মতো বিক্ষোভকারী চেরাগি পাহাড় মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ এক শিক্ষার্থীসহ দুজনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তুলতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ আটক দুজনকে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে চলে যায়। এরপর বিক্ষোভকারীরা চেরাগি পাহাড় মোড়ের এক পাশে সড়কে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে অধিকাংশই ছিলেন নারী বিক্ষোভকারী। ১৫ / ২০ মিনিট পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের অবস্থান লক্ষ্য করে পরপর দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর পুলিশ লাঠিপেটা করে সবাইকে সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে জড়ো হয়। ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এলে আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে।
আধঘণ্টা ধরে দফায় দফায় চলে এ সংঘর্ষ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশের ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেডের আঘাতে পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
এই সংঘর্ষের ঘটনার পর কাজির দেউড়ি মোড়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, গত কয়েক দিনে চলমান সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় বিচারের দাবিতে তাঁরা এ বিক্ষোভ করছিলেন। এ ছাড়া গণহারে গ্রেপ্তার ও তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করছিলেন। প্রেসক্লাবের সামনে তাঁরা কর্মসূচি পালন করতে না পেরে চেরাগি পাহাড় মোড়ে অবস্থান নেন। শান্তিপূর্ণভাবেই তাঁরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিলেন। পরে পুলিশ তাঁদের নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।