২০২১ সালের নভেম্বরে একটি ভিডিও বার্তায় মাইলস থেকে আলাদা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন অন্যতম সদস্য ভোকাল ও গিটারিস্ট শাফিন আহমেদ। তখন বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে ব্যান্ডের সব কার্যক্রম বন্ধের দাবিও করেন তিনি। এরপর মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত জটিলতায় আইনের শরণাপন্ন হয়েছেন দুই ভাই। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই শাফিন ছাড়া বাকি সদস্যরা মিলে ‘মাইলস’ পরিচালনা করছেন, কনসার্টেও গাইছেন। আবার শাফিন আহমেদও নিজের মতো করে একটি দল গঠন করে কনসার্ট করছেন। এভাবেই চলছিল।
কিন্তু গতকাল সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুক পেজে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শাফিন আহমেদ। জানান, বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে আসা ‘মাইলস’র আয়ের কোনও অংশই তিনি পাননি।
বছরের শেষ প্রান্তে এসে বিশ্বের জনপ্রিয় মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম স্পটিফাই শিল্পীদের গান-অ্যালবামের জনপ্রিয়তার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছে। স্পটিফাই-এর রিপোর্ট অনুসারে, চলতি বছর প্ল্যাটফর্মটিতে ১৪৪টি দেশ থেকে ‘মাইলস’ এর গান বেজেছে ২ মিলিয়ন বার। সেই রিপোর্ট ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে আনন্দের সঙ্গে শেয়ার করা হয়।
আর ওই পোস্টের স্ক্রিনশট দিয়েই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাফিন আহমেদ। তিনি লিখেছেন, ‘এরা স্পটিফাই ও অন্যান্য স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ‘‘মাইলস’’র সকল গান দিয়ে আসছে ২০১৫ সাল থেকে, কায়নেটিকের (এজেন্সি) মাধ্যমে। এক পয়সা রয়্যালটি এখনো আমার হাতে আসেনি। অতিসম্প্রতি আমার সুর করা গানগুলো সরিয়ে রাখা হয়েছে, আমি প্রতিবাদ করছি সেই ভয়ে। খেয়াল করে দেখেন, গ্রুপ ছবি থেকে আমাকে কেটে বাদ রাখা হয়েছে; কিন্তু আমার গাওয়া গানগুলো বাজছে ঠিকই। এই কর্মকাণ্ড আবার গর্বের সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে। আইনের কথা বাদই দিলাম। নৈতিকতা কতখানি বিসর্জন দিলে এ রকম কাজ করা সম্ভব, ভেবে দেখেন।’
হামিন আহমেদ আরও লিখেছেন, ‘কেন আপনি এখানে সবাইকে বলেন না যে রয়্যালটির সম্পূর্ণ অ্যাকাউন্টটি আপনার হাতে দেওয়া আছে এবং কপিরাইট বোর্ড ও পিবিআই-এর হাতে রয়েছে। যেখানে এটি পরিষ্কার যে আপনি আপনার নিজের সিদ্ধান্তে এবং তৃতীয়বারের মতো ‘‘মাইলস’’ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে ‘‘মাইলস’’র কাছে যা পান, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি ব্যান্ড আপনার থেকে পায়। কেন বলেন না যে পুলিশ রিপোর্টে বলা আছে, আপনার অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি!’
হামিনের কথায়, এত দিন সম্মান রক্ষা ও ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলেননি তিনি। তবে এবার এসব বন্ধ হওয়া জরুরি। এ ছাড়া ‘‘মাইলস’’র পাওনাগুলোও অবিলম্বে পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আর সবশেষে যে অভিযোগটি করেছেন, তা শাফিন আহমেদের মতো ব্যান্ড তারকার ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিতই বটে! হামিনের ভাষ্যে, “মাইলস’’র ডায়ানা অডিও স্টুডিও মনিটর স্পিকার ফিরিয়ে দিন, যা আপনি কাউকে না জানিয়েই নিয়ে গেছেন এবং যথেচ্ছ অবৈধ ব্যবহার করছেন!
যদিও শাফিন আহমেদের ওই পোস্টে হামিন আহমেদের এই দীর্ঘ মন্তব্যটি আর দেখা যাচ্ছে না। হয়তো দুজনের যে কেউ সেটি মুছে ফেলেছেন। তবে এর আগেই স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় ‘মাইলস’। ১৯৮২ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘মাইলস’ (ইংরেজি) বের হয়। ১৯৯১ সালে ‘প্রতিশ্রুতি’ অ্যালবামের মাধ্যমে বাংলা গানে তাদের অভিষেক। বর্তমানে ব্যান্ডটির লাইনআপে রয়েছেন হামিন আহমেদ, মানাম আহমেদ, সৈয়দ জিয়াউর রহমান তুর্য ও ইকবাল আসিফ জুয়েল।