মাহমুদ হাসান ফাহিম
মিরাজ মহানবী (সা.)-এর জীবনের অন্যতম বড় মোজেজা বা অলৌকিক ঘটনা। তিনি ছাড়া অন্য কোনো নবী এ সৌভাগ্য লাভ করেননি। যখন সবদিক থেকে রাসুল (সা.) মারাত্মক সংকট ও শোকের সম্মুখীন হন, পিতৃতুল্য চাচার মৃত্যু, প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণীর ইন্তেকাল, তায়েফের নির্মম ঘটনা, কাফিরদের অমানবিক অত্যাচারসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাসুল (সা.)-এর জীবন যখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে তাঁর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ দেন। হিজরতের আগে, ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে রজব মাসের কোনো এক রাতে এই অলৌকিক ঘটনা ঘটে।
আরবি মিরাজ শব্দের অর্থ সিঁড়ি। ইসলামের পরিভাষায় বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে অলৌকিক সিঁড়ির মাধ্যমে মহানবী (সা.)-এর সপ্তাকাশে ভ্রমণ করার ঘটনাকে মিরাজ বলা হয়। মিরাজের পাশাপাশি আরেকটি শব্দ হলো ইসরা। ইসরা অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ। মূলত বোরাক নামের বিশেষ বাহনে চড়ে পবিত্র কাবাঘর থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত তাঁর সেদিনের ভ্রমণকে ইসরা বলা হয়।
পবিত্র কোরআনে ইসরার বর্ণনা এসেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশ আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন। (সুরা ইসরা: ১)
সুরা নাজমে মিরাজের ঘটনারও ইঙ্গিত এসেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘বস্তুত সে তাকে (ফেরেশতাকে) আরও একবার দেখেছে সিদরাতুল মুনতাহার কাছে। তারই কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মাওয়া। যখন কুলগাছটি আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তা, যা তাকে আচ্ছন্ন রেখেছিল। (রাসুলের) চোখ বিভ্রান্ত হয়নি এবং সীমা লঙ্ঘনও করেনি। বাস্তবেই সে তার প্রতিপালকের বড়-বড় নিদর্শনের বহু কিছু দেখেছে।’ (সুরা নাজম: ১৩-১৮)
এ ছাড়া ২৬ জনেরও বেশি সাহাবি থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে মিরাজের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং মিরাজ অকাট্যভাবে প্রমাণিত সত্য ঘটনা। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
লেখক: মাহমুদ হাসান ফাহিম, ইসলামবিষয়ক গবেষক