রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
‘পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন’ প্রকল্পে পরিবর্তন আসছে। আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্র করে কারা জাদুঘর সাজানোর যেই প্রকল্প সাজিয়েছিল, সেখানে পরিবর্তন আনছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, কারা জাদুঘরে ব্যক্তির স্মৃতি সংরক্ষণ কমিয়ে গুরুত্ব পাবে ঢাকার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যসহ ৪০০ বছরের ইতিহাস।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পটি পর্যালোচনা করে ব্যয় কমিয়ে প্রস্তাব দিতে বলা হয়। জাদুঘরসহ অন্যান্য বিষয়গুলো ব্যক্তি বা নামকেন্দ্রিক না হয়ে কীভাবে সার্বিক করা যায়, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। তাই প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ আছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালের নভেম্বরে ‘পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৬০৭ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
এতে ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ করা, জাদুঘর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, মাল্টিপারপাস ভবন কমপ্লেক্স, চক কমপ্লেক্স, পার্ক, মাঠ, কমিউনিটি সেন্টারসহ নানা নাগরিক সুবিধা রাখা হয়। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কারা অধিদপ্তর। প্রথমে ২০২৩ সালে ও পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সাল নাগাদ এটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
কারা অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর সময় ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়। বিগত সরকারের শেষ সময়ে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এতে ৯ মাস কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়নি।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে প্রকল্পে কিছু দিকনির্দেশনা দেয়। নতুন করে প্রকল্প পর্যালোচনা করে কিছু জিনিস বাদ দেওয়া যায় কি না, তা দেখে বাজেট দিতে বলা হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় প্রস্তাবণা তৈরি করা হচ্ছে। কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব রব বলেন, নতুনভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। নতুন প্রস্তাবে কারাগারে সবার ইতিহাস ও ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য প্রাধান্য পাবে। শুধু রাজনৈতিকভাবে দেখা ঠিক হবে না।