নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
রাজস্ব বিভাগে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-অপরাধে জড়িত একে একে ৩৪ কর্মকর্তা–কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করে জেলা প্রশাসন। তাঁদের জায়গায় নতুন করে লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু সেখানেও আরেকটু হলে ঢুকে পড়তেন অনিয়ম করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা।
গতকাল বুধবার জেলার রাজস্ব প্রশাসনের অফিস সহায়ক পদের মৌখিক পরীক্ষায় ধরা পড়েছেন এমন ১১ জন পরীক্ষার্থী। তাঁরা সবাই একটি চক্রের সহায়তায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁদের পাশাপাশি অন্যের কাছ থেকে দেখে পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে আরও তিনজনকে আটক করা হয়। তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নজরদারির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ‘বাথরুমে’ যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে গেছেন আরও ২১ পরীক্ষার্থী। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরাও অন্যের সহায়তায় লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছিলেন।
আটক ১৪ পরীক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কারা তাঁদের হয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিয়েছিল তাঁদেরও খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ১০টা থেকে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম হলে শুরু হয় রাজস্ব প্রশাসনের অফিস সহায়ক পদের মৌখিক পরীক্ষা। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দেখতে পান পরীক্ষার্থীদের অনেকেরই প্রবেশপত্র ফটোশপের সাহায্যে সম্পাদনা করা। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ওসব শিক্ষার্থীর মৌখিক পরীক্ষার লেখার সঙ্গে লিখিত পরীক্ষার হাতের লেখা মিল আছে কিনা দেখতে চান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
এ সময় লেখায় মিল না থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে ওই শিক্ষার্থীরা স্বীকার করেন, তাঁদের হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল অন্যরা। সেই পরীক্ষায় প্রবেশপত্রের ছবিতে ওই শিক্ষার্থীদের ছবি ছিল। এখন মৌখিক পরীক্ষায় যাতে ধরা না পড়েন সে জন্য তাঁরা সম্পাদনা করে তাঁদের ছবি যুক্ত করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা তদারকি বাড়াতেই ২১ শিক্ষার্থী কৌশলে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যান।
জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আটক ১৪ শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ১১ পরীক্ষার্থীর হয়ে লিখিত পরীক্ষায় বদলি দিয়েছিলেন। নিশ্চয় জিজ্ঞাসাবাদে বদলি পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নামও বেরিয়ে আসবে। তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।