কাউনিয়া প্রতিনিধি
প্রয়োজনীয় চাহিদা না থাকায় কাউনিয়ায় বিলীনের পথে চলে গেছে মৃৎশিল্প। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবসহ নানা সংকটের মধ্যেও এখনো কেউ কেউ এই পেশা ধরে রেখেছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মাটির কাজ ছেড়ে বালু-সিমেন্ট দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তা বেষ্টিত কাউনিয়ায় মাটির তৈরি হাঁড়ি, চুলা, ফুলের টব, ব্যাংক, আগরদানি, মোমদানি, প্রদীপসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী একসময় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। এসব বস্তুর বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে এ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কারিগরেরা। জীবনমান উন্নয়নের জন্য ক্রমশ অন্য পেশার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন তাঁরা। আর যাঁরা এখনো এই ধারায় আছেন তাঁরা ভুগছেন অর্থাভাবে।
উপজেলার মীরবাগ এলাকায় কথা হয় মৃৎশিল্পী ইউনুস মিয়ার সঙ্গে। তাঁর নিজস্ব জমিজমা নেই। তিন ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে রাস্তার পাশে ঘর তুলে বসবাস করছেন। তিনি প্রায় ২২ বছর আগে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে মীরবাগ বাজারে মৃৎশিল্পের কাজ শুরু করেন। এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় তিনি বালু-সিমেন্ট দিয়ে হাতি, ঘোড়া, বাঘ, পাখি, স্যানিটারি টয়লেটের রিং, চুলা তৈরি করছেন।
ইউনুস বলেন, ‘সিমেন্টের তৈরি ব্যবহার্য অনেক জিনিসের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে পারছি না।’
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তবারক আলী বলেন, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। তা না হলে একসময় এই শিল্প বিলীন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সামিউল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মৃৎশিল্পীদের নামের তালিকা অনলাইনে নিবন্ধন করা হচ্ছে। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে এসব মৃৎশিল্পী সরকারিভাবে সহায়তা পাবেন।