ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
কলাবুনিয়াপাড়ার মেয়ে উম্রাচিং মারমা। এ বছর কাপ্তাই কর্ণফুলী সরকারি কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। এর আগে চিৎমরম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং চিৎমরম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়েছেন প্রাথমিকের পাঠ। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পাহাড়ি কলাবুনিয়া গ্রামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় তাঁকে দূরের এসব গ্রামে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে।
তাঁরা জানান, কর্ণফুলী নদী পার হতে ভয় লাগে। তাঁদের মা-বাবারা জুমে কাজ করায় তাঁদের স্কুলে নিতে পারেন না। তাই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়া দরকার এই গ্রামে। তাতে গ্রামের শিশুদের দুঃখ সামান্য হলেও লাঘব হবে।
এলাকার কারবারি অংহ্লাচিং মারমা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কী পরিমাণ কষ্ট করে অন্যত্র পড়াশোনা করতে যায়, তা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। ছোট ছোট শিশু ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকায় পড়তে যায়। নদীতে পানি বেড়ে গেলে কিংবা পাহাড়ি ঢলে নদীর স্রোত বেড়ে গেলে ঝুঁকি নিয়ে তাদের স্কুলে যেতে হয়। আমরা সরকারের কাছে এই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের আহ্বান জানাই।’
চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই গ্রামটি অনেক দূরে। এই গ্রামের শিশুরা শুধু পাড়াকেন্দ্রে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে থাকে। এই এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন হওয়া জরুরি।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার আচার্য্য বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ শুরু করেছে সরকার। কিন্তু অন্যতম শর্ত হলো, ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ জমি সরকারের অনুকূলে থাকতে হবে। যদি এই এলাকায় প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যায় তাহলে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে।