বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
বেসরকারি খাতের প্রসারে অর্থনীতি বড় হলেও রাজস্ব আয়ে এর পুরো প্রতিফলন নেই। সক্ষম সব করদাতাকে করের আওতায় আনা যাচ্ছে না। স্বেচ্ছায় যেমন করদাতারা কর দেন না, আবার কর বিভাগও তাদের খুঁজে বের করতে কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় উদ্যোগী নয়। ফলে বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দিলেও আদায় হচ্ছে গতানুগতিক। আগের অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির মুখে রয়েছে এনবিআর। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে, আট মাসে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। পরবর্তী চার মাসে এ ঘাটতি শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উন্নয়ন সহযোগীরা বলছে, বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাওয়া অর্থনীতিগুলোর একটি। সব শেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাদাগাদ তথ্য বলছে, গত এক বছরেই ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে আট হাজার। তবে এসব সাফল্যের প্রতিফলন রাজস্ব আয়ে থাকার কথা থাকলেও তেমনটি নেই; বরং অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাই শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে পারছে না সংস্থাটি। যাঁরা কর ফাঁকিবাজ বা টিআইএন নিয়ে যে বিপুলসংখ্যক করদাতা রিটার্ন দাখিল করছেন না, তাঁদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাচ্ছে না।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে আট মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে শুল্ক খাতে। এ সময়ে ৭৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা আদায়ের বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এক শুল্ক খাতেই ঘাটতি পড়েছে ১৩ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে ভ্যাট খাতে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভ্যাটের আদায় সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আট মাসে ৮২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা আদায়ের বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। ঘাটতি হয়েছে ৫ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
আয়কর খাতে আদায় হয়েছে ৬০ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঘাটতি পড়েছে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। আর আট মাসের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা। তবে এ সময়ে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি হয়েছে ২২ হাজার ৯৭৮ হাজার কোটি টাকা।