সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
অবশেষে চট্টগ্রামের কুমিরা থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া নৌপথে স্পিডবোট ও ট্রলারের ভাড়া কমানো হয়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়া ভাড়া বাড়ানোর পর তীব্র সমালোচনার মুখে এই ভাড়া কমানো হয়। এর আগে গত সোমবার নৌরুটের ভাড়া ২৫০ টাকা নেওয়া হলেও মঙ্গলবার থেকে তা বাড়িয়ে নেওয়া হয় ৩০০ টাকা করে।
ঘাট ইজারাদার আনোয়ার বলেন, ‘এখন থেকে স্পিডবোটের ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ টাকা নেওয়া হবে। যাত্রীদের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে যেন লাইনে না দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, এ জন্য চট্টগ্রামের হালিশহরে একটি টিকিট কাউন্টার হবে।’
এ ছাড়া ভাটার সময় যাতে মানুষের কাদায় না নামতে হয়, এ জন্য সাত দিনের মধ্যে কাঠের সাঁকোর ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে ইজারা প্রথা বাতিল করে দেশের অন্যান্য নৌপথের মতো কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথ উন্মুক্ত করার দাবিতে মাতৃভূমি কমিউনিটি সেন্টারে এক মতবিনিময় সভা হয়। সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন ও সন্দ্বীপ এডুকেশন সোসাইটির উদ্যোগে গত রোববার সন্ধ্যায় অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ বারীর সভাপতিত্বে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপবাসীদের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এ সভা হয়।
সভায় বক্তব্য দেন এডুকেশন সোসাইটির আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাজিবুল আহসান সুমন, অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ কাশেম, সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুছাপুর সমিতির সভাপতি জনাব সামসুল আলম, অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব মনজুর আলম, সোসাইটির সদস্যসচিব জনাব শাহজামান আরজু, সদস্য আলহাজ হুমায়ুন কবির ম্যানেজার, অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মনিরুল মাওলা রিপন প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত সবাই কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রী ভাড়া ও মালামালের ভাড়া এবং ঘাট ব্যবস্থাপনার চরম অব্যবস্থাপনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথের মালিক বিআইডব্লিউটিএ। সরকার এই পথে চলাচলের জন্য ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন জাহাজ দিয়েছে। যাত্রী ওঠানামাতে বিড়ম্বনা, পারাপারে দীর্ঘসূত্রতা ও জেলা পরিষদের ইজারাদারের সঙ্গে যোগসাজশে বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ প্রায় বন্ধ থাকে। ১১ বছর ধরে দৈনিক খাস কালেকশনের নামে ব্যক্তিবিশেষকে নিয়োগের মাধ্যমে যাত্রী পারাপারের কিছু সিন্ডিকেট তৈরি করে একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে সন্দ্বীপের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নিয়োগকৃত ব্যক্তিরা তাঁদের ইচ্ছামাফিক মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী ভাড়া ও মালের ভাড়া নির্ধারণ করে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তাই দেশের অন্যান্য নৌপথের মতো প্রতিযোগিতামূলক যান চলাচলের ব্যবস্থা চালুর জন্য একক ইজারা প্রথা বাতিল করে ঘাট উন্মুক্ত করার দাবি জানানো হয়।