আবদুল আযীয কাসেমি
আরবি সাহাবি শব্দের অর্থ সঙ্গী বা সহচর। ইসলামের পরিভাষায় সাহাবি বলা হয়, যাঁরা মুমিন অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য হলেও নবীজির সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন। তবে কেউ কেউ বলেছেন, মোটামুটি দীর্ঘ সময় নবীজির সান্নিধ্যে কাটালে তাঁকে সাহাবি বলা হয়।
সাহাবায়ে কেরাম এমন এক কাফেলার নাম, যাঁদের আল্লাহ তাআলা তাঁর শ্রেষ্ঠ নবীর শিষ্য হওয়ার জন্য নির্বাচিত করেছেন। সাহাবিদের ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিশ্বাস হলো তাঁরা নিষ্পাপ নন বটে, তবে নবীজির সান্নিধ্যের বরকতে আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত তাঁরা। তাঁদের প্রতি আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁদের ইমানকে অন্যদের জন্য মাপকাঠি সাব্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।’ (সুরা তওবা: ১০০)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর প্রেরিত রাসুল। আর যাঁরা তাঁর সঙ্গী, তাঁদের বৈশিষ্ট্য হলো তাঁরা কাফেরদের বিরুদ্ধে অতি কঠোর এবং পরস্পরের মধ্যে খুবই আন্তরিক। তুমি তাঁদের দেখবে নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি সন্ধান করছে, তাঁদের ললাটে রয়েছে সিজদার চিহ্ন।’…(সুরা ফাতহ: ২৯)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার সাহাবিদের গালি দিও না। আল্লাহর শপথ, তোমাদের কেউ যদি উহুদ পর্বত সমান স্বর্ণমুদ্রা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তা কোনো সাহাবির দুমুঠো বা তার অর্ধেকের সমানও হবে না।’ (মুসলিম)
ইমাম ইবনু কাসির বলেন, ‘সেসব লোকের জন্য দুর্ভোগ, যাঁরা সাহাবিদের সবাইকে অথবা কোনো কোনো সাহাবিকে ঘৃণা করে কিংবা গালিগালাজ করে। বিশেষত নবীজির পর যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ, তথা হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.)। রাফেজিরা সাহাবিদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। এটা তাদের অন্তরের বক্রতা ও বুদ্ধির বিকৃতি প্রমাণ করে। তারা মূলত কোরআনের প্রতিই বিশ্বাস রাখে না।’
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক