লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
আফ্রিকার প্রথম কোনো দল হিসেবে আজ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলবে মরক্কো। এই বিশ্বকাপে কোয়ার্টার পর্যন্ত মরোক্কানরা যা করে দেখিয়েছে, সেটা রীতিমতো বিস্ময়! আর এই বিস্ময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুর, তিনি যেন অ্যাটলাস পর্বতের (মরক্কো) অতন্দ্র প্রহরী।
বুনুর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে এই বিশ্বকাপে মাত্র ১টি গোল হজম করেছে মরক্কো। সেটিও আবার আত্মঘাতী। হয়তো এই গোল নিয়ে আফসোসও নেই সেভিয়া গোলরক্ষকের!
বাপ-দাদার দেশ মরক্কো হলেও বুনুর জন্ম কানাডায়। তিন বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে চলে এসেছিলেন মরক্কোয়। এখন তিনিই মরোক্কানদের বড় ভরসার নাম।
কাতার বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে ৪ ক্লিন শিটে গোলরক্ষকদের মধ্যে বুনুই সবচেয়ে এগিয়ে। মরক্কোর ‘ইয়াসিন’ যেন মনে করিয়ে দিচ্ছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ প্রহরী লেভ ইয়াসিনকেও। বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে স্পেনকে বিদায় করার মূল কারিগর ছিলেন বুনু। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা তিনি সেমিতে ফ্রান্সের বিপক্ষেও দেখাতে চান।
সেমিফাইনাল নিয়ে বুনু বলেছেন, ‘ফ্রান্সকে নিয়ে বলার কিছু নেই। তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন; তাদের শক্তি সবারই জানা। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সেরাটা দিতে পারলে তাদের হারানো অসম্ভব নয়। গোলপোস্টে আমাকে আরেকবার ঠিকঠাক সবকিছু করতে হবে।’
তবে বুনুর দলকে রুখতে ফ্রান্সের গোলপোস্টের নিচে আছেন অভিজ্ঞ এক প্রহরী হুগো লরিস। যিনি ১৪ বছর ধরে দক্ষতার সঙ্গে এই কাজটি করে যাচ্ছেন। এক যুগ ধরে ফ্রান্স দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কও তিনি।
এবারও লরিসের নেতৃত্বে ফাইনালের স্বপ্ন দেখছেন ফরাসিরা। তবে ৩৬ বছর বয়সী গোলরক্ষকের পারফরম্যান্স এই বিশ্বকাপে যেন কিছুটা রং হারিয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কোনো ক্লিন শিট নেই। পাঁচ ম্যাচের সব কটিতেই গোল হজম করেছে। মরক্কো অপরাজিত থাকলেও ফ্রান্স তিউনিসিয়ার বিপক্ষে হেরেছে গ্রুপ পর্বে।
২০১৮ বিশ্বকাপে শতকরা ৬৭ ভাগ শট ঠেকিয়েছেন লরিস, কাতারে সেটি ৪০ শতাংশ। ফ্রান্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি (১৪৩) ম্যাচ খেলা লরিস যথেষ্ট সমীহই করছেন মরক্কোকে। ফ্রান্স অধিনায়ক বলেছেন, ‘মরক্কোর বিপক্ষে বিশেষ কিছু অর্জনের জন্য আমাদের সব সামর্থ্য ও শক্তির প্রয়োজন হবে। আমার মনে হয়, সবাই এসব নিয়ে সচেতন আছি। তবে আমাদের শান্ত থাকতে হবে।’
ম্যাচ যদি টাইব্রেকারে যায়, দারুণ এক লড়াই দেখা যাবে। লড়াইটা পরীক্ষিত, অভিজ্ঞ প্রহরীর সঙ্গে বড় মঞ্চে এসেই বিস্ময় উপহার দেওয়া এক প্রহরীর।