রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঈদুল আজহা সামনে রেখে শেষ সময়ে পশুর যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজবাড়ীর খামারিরা। বিশেষ করে রাজবাড়ীর রাজা, ভিক্টর, সম্রাট ও রাজাবাবুর মতো ২৭-৩৫ মণ ওজনের গরুগুলো নিয়ে অনেক আশা খামারিদের। বাহারি নাম রেখে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তাঁরা। এসব গরু বাড়তি দামের আশায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় নেওয়া হতে পারে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বড় দোয়াল গ্রামের আরএস এগ্রো ফার্মে কোরবানির জন্য ৩৫ মণ ওজনের একটি ষাঁড় প্রস্তুত করা হয়েছে। গরুটির যত্নে রাতদিন পরিশ্রম করছেন খামারি। লম্বায় ৮ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার এ গরুটির নাম রাখা হয়েছে রাজবাড়ীর রাজা।
একই উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের কৃষক ইউনুছ শেখ ও তাঁর স্ত্রী বুলু বেগমের ভিক্টরও এলাকায় সাড়া ফেলেছে। দুই বছর আগে ফরিদপুর সদর উপজেলার পরমান্দপুর হাট থেকে ৮৭ হাজার টাকা দিয়ে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি কেনেন তাঁরা। গরুটির নাম রাখেন ভিক্টর। ৩০ মণ ওজনের ভিক্টরের খাওয়ানো হয় ভুট্টা, ছোলা, খেসারি, গমের ভুসি, খড় ও তাজা ঘাসসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ভিক্টরের দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা।
এ দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের পশ্চিম উজানচর মৃধাডাঙ্গা গ্রামের খামারি ফজলু মণ্ডল হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতার কালো রঙের ৩৫ মণ ওজনের একটি গরু প্রস্তুত করেছেন। গরুটির নাম দিয়েছেন রাজবাড়ীর রাজাবাবু। বর্তমানে গরুটির ওজন ১ হাজার ৪০০ কেজি। বিক্রি করতে চান ১২ লাখ টাকায়।
ফজলু মণ্ডল বলেন, ষাঁড়টি খুবই শান্ত প্রকৃতির। শুরু থেকেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পরামর্শ মেনে কোনো ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়াই শুধু দেশীয় খাবারে গরুটি লালনপালন করা হয়েছে।
অপরদিকে কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ি ইউনিয়নে জয়রামপুর গ্রামে একটি গরুর নাম রাখা হয়েছে সম্রাট। সাড়ে তিন বছর বয়সী ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির ওজন ২৭ মণ হবে বলে ধারণা।
সম্রাটের মালিক আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, কোরবানির ঈদে ষাঁড়টি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। ষাঁড়টি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। ষাঁড়টির দাম চেয়েছেন ১৭ লাখ টাকা।
রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট খামার রয়েছে ৮ হাজার ২৯৫টি। এর মধ্যে গরুর ৫ হাজার ১০টি, ছাগলের খামার ৩ হাজার ২০৫টি, ভেড়ার ৬০টি এবং মহিষের খামার রয়েছে ২০টি। জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৭৭টি।