রংপুর প্রতিনিধি
অতি দ্রুত রংপুর ক্যান্টনমেন্টসংলগ্ন পাকিস্তানি সেনাদের চালানো হত্যাযজ্ঞের স্থানগুলো চিহ্নিত এবং বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষণ করার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস পালন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে নগরীর উপকণ্ঠ নিসবেতগঞ্জে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত রক্তগৌরব স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফির নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দুই দিন পর ২৮ মার্চ মুক্তিকামী বাঙালিরা বাঁশের লাঠি, তির-ধনুক নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করেছিলেন। সেই দিন নিরস্ত্র বাঙালিরা পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব পেশার সংগ্রামী মানুষ যার যা আছে তাই নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ঘেরাও অভিযানে আহত ও নিহতদের পরিবারের কান্না এখনো থামেনি। দেশ স্বাধীনের ৫১ বছরেও তাঁদের ভাগ্যে জোটেনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও কোনো সহযোগিতা।
বক্তারা আরও বলেন, সে দিনের শত শত দেশপ্রেমী জনতার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি আজও মেলেনি। প্রতি বছর ২৮ মার্চ এলে কিছু অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে এসব বীর শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণ। ২৮ মার্চকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
আলোচনা সভায় সাবেক সাংসদ হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, রাধাকৃষ্ণপুর ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, মুক্তিযোদ্ধা শেখ আমজাদ হোসেনের ছেলে খায়রুল আলম দুখুসহ নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।