নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
একটি চেয়ারে রাখা হয়েছে মাটির গন্ধগোকুল। সেটি স্কেল দিয়ে মাপছেন এক শিল্পী। সামনেই দাঁড়ানো বাঁশের চটি ও কাঠের একটি কাঠামো। দেখতে গন্ধগোকুলের মতোই।
যিনি দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন, ‘ঠিকই ধরেছেন। এই কাঠামো ধীরে ধীরে গন্ধগোকুলে রূপ নেবে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-কে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রায় কাঠামোটি দেখা যাবে। এটি ছাড়াও দেখা মিলবে শিশু পুতুল, বুনো হাতি ও চাকার।’
এগুলো তৈরির দেখভাল করছিলেন চারুকলার সদ্য স্নাতক দেবব্রত বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘এবারে চারটি কাঠামো হবে। পুতুল খেলছে এমন এক শিশু, গন্ধগোকুল, হাতি এবং একটা সাজানো চাকা। চাকা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অগ্রযাত্রাকে তুলে ধরবে। বাকি উপাদানগুলো নেওয়া হয়েছে আমাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে।’
হাতি, ঘোড়া কিংবা বাঘ প্রায়ই দেখা যায় মঙ্গল শোভাযাত্রায়। এবার যুক্ত হয়েছে গন্ধগোকুল। কী তাৎপর্য এর? দেবব্রত বলেন, ‘গন্ধগোকুল আমাদের গ্রামাঞ্চলে এক সময় প্রচুর দেখা যেত। এখন এটি বিলুপ্তপ্রায়। তবে কাঠামোটি একেবারেই গন্ধগোকুলের মতো করা হয়নি। গন্ধগোকুল, শেয়াল ও বেজি তিনটি প্রাণী থেকে উপাদান নিয়ে একটি কাঠামো দেওয়া হয়েছে।’
জয়নুল গ্যালারির একটা অংশে ছবি আঁকছেন কয়েকজন। তাঁদের দেখভাল করছিলেন চারুকলার শিক্ষার্থী জাবির হোসেন। তিনি বললেন, ‘এখানে আর্টক্যাম্প চলছে। চারুকলার শিক্ষক ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন এতে। মূলত আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ২১ মার্চ থেকে। শোভাযাত্রার মূল জিনিস হলো কাঠামো তৈরি। এ ছাড়া পেইন্টিং, মুখোশ, সরা পেইন্টিং এগুলো কাঠামোগুলোর অর্থায়নের জন্য করে থাকি।’
রাজা-রানি, প্যাঁচাসহ বিভিন্ন ধরনের মুখোশ, স্বরা পেইন্টিং এবং পেইন্টিং বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। এগুলো চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকে কিনতে পারবেন শিল্পানুরাগীরা। লোকবলের ঘাটতি থাকলেও সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন ৬ এপ্রিলের মধ্যে কাঠামো তৈরির পুরো কাজ শেষ হবে।
গত ২১ মার্চ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের প্রস্তুতির উদ্বোধন ঘোষণা করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক চিত্রশিল্পী হাশেম খান।