দেবিদ্বার প্রতিনিধি
দেবিদ্বার উপজেলা মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে হটিয়ে উপজেলার নিয়ন্ত্রণ নেন মুক্তিযোদ্ধারা। দিনটি উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক উন নবী তালুকদার।
আলোচনা সভায় বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ধরে পায়ে হেঁটে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের দিকে যাত্রা শুরু করে। অত্যাধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত পাকিস্তানি দলটিকে দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়ি এলাকায় সাধারণ জনতা প্রতিরোধ করে। সেদিন মহাসড়কের ভিংলাবাড়ি থেকে জাফরগঞ্জ শ্রীপুকুরপাড় জামে মসজিদ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিকামী জনতার এক অসম সংঘর্ষ হয়।
দিনব্যাপী সংঘর্ষে ৩৩ জন শহীদ হন। আহত হন অনেকে। হত্যা করা হয় ১৫ পাকিস্তানি সেনাকে। পরে ১৪ এপ্রিল বরকামতা গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ চালায়। এ খবর পেয়ে কমিউনিস্ট নেতা আবদুল হাফেজ ও আবদুল হালিম পুলিশের নেতৃত্বে হাজার হাজার বাঙালি মাত্র দুটি থ্রি-নট থ্রি রাইফেল ও লাঠি হাতে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে শত্রু সেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এরপর সংগ্রামের এক পর্যায়ে ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথ আক্রমণ চালায়। এ সময় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ সেতুটি মাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হয়। মিত্রবাহিনীর ট্যাংকবহর এ দিন বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া হয়ে দেবিদ্বারে আসে। হানাদারেরা ওই রাতেই দেবিদ্বার ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসে পালিয়ে যায়।
সভার আগে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ওমানী, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী আবদুস সামাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মো. সাইফুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজমা মোর্শেদ প্রমুখ।