মাওলানা ইসমাইল নাজিম
বোনের প্রতি ভাইয়ের দায়িত্ব অনেক। বাবা বা অন্য কোনো অভিভাবক না থাকলে ভাইকেই বোনের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করতে হয়। তার ভরণপোষণ, বিয়েশাদি ও সম্পদের ন্যায্য হিসসা বুঝিয়ে দেওয়া ভাইয়ের একান্ত দায়িত্ব। বিয়ের পর বোনের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া এবং তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করাও ভাইয়ের অন্যতম কর্তব্য। কোরআন-হাদিসে বিষয়টির কথা অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে।
এক. বোনের লালন-পালনের প্রতি মনোযোগী ব্যক্তিকে আল্লাহ সংসারে অশেষ বরকত দেবেন। হাদিসে এসেছে, একবার জাবির (রা.)কে নবী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কুমারী নারী বিয়ে না করে তালাকপ্রাপ্তা নারী বিয়ে করেছ কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমার বাবা মারা গেছেন। আমার ছোট ছোট কয়েকটি বোন আছে, তাদের লালন-পালন ও শিক্ষা-দীক্ষার জন্যই আমি বয়স্ক নারী বিয়ে করেছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
দুই. বাবা অক্ষম হয়ে গেলে বা মারা গেলে বোনের দেখাশোনা করা এবং বিয়ের উপযুক্ত হলে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দেওয়া ভাইয়ের দায়িত্বের অংশ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যার তিনটি মেয়ে আছে অথবা তিনজন বোন আছে, কিংবা দুই বোন বা দুই মেয়ে আছে, এরপর সে তাদের শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা করে, উত্তম পাত্র দেখে বিয়ে দেয় এবং তাদের সঙ্গে সর্বোত্তম ব্যবহার করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত।’ (তিরমিজি)
তিন. বিশেষ করে আমাদের সমাজে বোনের প্রাপ্য সম্পদ বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করতে দেখা যায়। এটি ইসলাম কখনো অনুমোদন করে না। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারও উত্তরাধিকার সম্পত্তি গ্রাস করে, অন্য বর্ণনামতে, যে ব্যক্তি কারও উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে পলায়ন করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক