সাক্ষাৎকার

বছরজুড়ে কী হবে, আমরা কিছুই জানি না

সাফ জয়ের পর ২০২৩ সালে এলোমেলো একটা সময় পার করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নানা কাণ্ডে বিতর্কিত বছরটা নারী ফুটবলাররা শেষ করেছেন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচ জিতে। কেমন ছিল ২০২৩ সাল, নতুন বছরে কী থাকছে চাওয়া—তা নিয়ে নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাজিম আল শমষের— 

প্রশ্ন: বছরটা শেষ হলো দারুণ দুই জয়ে। ২০২৩ সালের শুরু আর শেষটা যদি পর্যালোচনা করেন, তাহলে আপনার চোখে কেমন ছিল এই বছরটা? 
সাবিনা খাতুন: শেষটা ভালো গেছে এটা ঠিক, তবে সব মিলিয়ে এই বছর কোনো খেলাধুলা ছিল না। লিগ ছিল না, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিল, সেটাও হলো না। শেষটা ভালো ছিল, এতটুকুই বলব।

প্রশ্ন: সাফ জয়ের পর যতটা উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, আরও ভালো করার যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা কি হয়েছে? 
সাবিনা: আমার চোখে মেয়েদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিয়ে পারে, এটাই হচ্ছে ব্যাপার। তবে বছরের মাঝখানে মেয়েরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, অনেক কিছুর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। কোচ বদল হলেন। ছোটন স্যার চলে গেলেন, পল স্যারও থাকলেন না। এসব নিয়ে মন খারাপ ছিল মেয়েদের। 

বেতন-ভাতা নিয়েও একটা সমস্যা চলছিল। ফিটনেসে হয়তো খানিকটা ঘাটতি ছিল। এরপর বেতন বৃদ্ধি পেল, নতুন কোচ এলেন। নেপালের বিপক্ষে দুই ম্যাচের আগে একটা খারাপ অবস্থা ছিল, এটা বলতেই হবে। সেখান থেকে মেয়েরা ধীরে ধীরে নিজেদের আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।

প্রশ্ন: বছরের শুরুতে ও মাঝখানে যে এলোমেলো সময়টা এল, সাফ জয়ের পর এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা কি একদমই প্রত্যাশিত ছিল? বিষয়গুলো পেশাদারিভাবে সামলানো যেত কি না? 
সাবিনা: বিষয়গুলো আরেকটু গোছানো হলে ভালো হতো। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, সারা বছরে আমরা কী কী খেলব, বছরের শুরুতেই যদি তার একটা তালিকা বা ক্যালেন্ডার মেয়েদের জানিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে একটা আলাদা স্পৃহা জোগায়। মেয়েরা তাগিদ পায় যে এই বছর আমাদের এমন সব লক্ষ্য আছে, প্রস্তুত থাকতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা কিছুই জানি না। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের আন্তর্জাতিক কী কী খেলা আছে, ঘরোয়া লিগ কখন হবে—সব যদি জানা থাকে, তবে সেটা মেয়েদের জন্য ভালো। 

প্রশ্ন: ২০২৩ সালে আপনারা ঘরোয়া ফুটবলেই খেলতে পারলেন না, এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ? 
সাবিনা: বছরজুড়ে মাঠে খেলা থাকলে তবেই না উন্নতির বিষয়গুলো সামনে আসবে। যত খেলা থাকবে, মেয়েরা তত উন্নতি করবে। একজন খেলোয়াড়ের সব সময়ের চাওয়া—মাঠে খেলা থাকুক। মাঠে খেলা থাকতে হবে। 

প্রশ্ন: নতুন বছরে আপনার কী প্রত্যাশা?
সাবিনা: বেশি করে আন্তর্জাতিক ম্যাচ দরকার, ঘরোয়া টুর্নামেন্ট দরকার। ছেলেরা যেভাবে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে, মেয়েরাও সেভাবে যদি খেলতে পারে, তার প্রভাবটা থাকবেই। ছেলেদের ফুটবল যেভাবে উন্নতি করছে, তাকে সাধুবাদ জানাতেই হবে। দেখুন, তাদের অনেক প্রতিযোগিতা। তাদের ভালো করার তাড়নাটা তাই বেশি। সারা বছরই তাদের অনেক খেলা। সেই তুলনায় মেয়েদের খেলা নেই বললেই চলে। খেলা যদি না-ই থাকে, মেয়েরা এগোবে কীভাবে? ইচ্ছাটুকু তো আসতে হবে। 

প্রশ্ন: আপনাদের বেতন এখনো বাকি। বেতন ছাড়াই ছুটিতে গেলেন। এতে কি মন খারাপ? 
সাবিনা: মেয়েরা বলেছিল, বেতনটা হলে ভালো হয়। আসার আগে আপা (মাহফুজা আক্তার কিরণ, নারী উইংয়ের প্রধান) বলেছিলেন, তোমরা বেতন এবং ম্যাচ ফি পেয়ে যাবা। এক মাসের বেতন পেয়েছি, অক্টোবর মাসের। এখনো ম্যাচ ফি ও নভেম্বর মাসের বেতন বকেয়া আছে। বেতনটা নিয়মিত হলে ভালো হয়। আমাদের বলা হয়েছিল, ফিফার কিছু নিয়মকানুন আছে, যার কারণে প্রথম মাসের বেতন একটু দেরি হয়েছে।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, পল স্মলি নারী দলের কোচ হয়ে আসছেন? তাঁকে না এনে যদি অন্য কোনো কোচ আনা হতো, সেটা কি ভালো হতো, নাকি স্মলির হাতেই নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ ভালো?
সাবিনা: একজন ফুটবলার হিসেবে যিনিই কোচ হবেন, তাঁর অধীনে কাজ করতে আমার আপত্তি নেই। এখানে নতুন কোচ খেলোয়াড়দের মানসিকতা বুঝতে পারছেন কি না, সেটাই আসল বিষয়। খেলোয়াড়দের সক্ষমতা সম্পর্কে কোচের ভালো ধারণা থাকতে হবে। অতীতে দেখেছি, মেয়েরা বেশি চাপ নিতে পারে না এমন ধারণা অনেক কোচেরই ছিল। এই চিন্তা বাদ দিয়ে যিনি আসবেন, তাঁকে স্বাগত। মেয়েরা চাপ নিতে পারছে না—কোচের মুখে আমি এমন কথা শুনতে চাই না। শেষ কয়েক বছরে মেয়েরা যে পরিশ্রম করছে, এসবের পরে কেউ এমন মন্তব্য করলে এটা আমি মানতে পারব না। 

প্রশ্ন: ২০২৪ সালে কী চাওয়া?
সাবিনা: ২০২৪ সালটাকে গোছানো চাই। পুরো বছরের সূচিটা জানতে চাই। বেশি ম্যাচের বিকল্প আপাতত চাচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য যদি থাকে সাফ শিরোপা ধরে রাখতে হবে, তবে একটা ভালো মাঠের বেশ প্রয়োজন। সাফ জিততে হলে ফিফা উইন্ডোর পাশাপাশি সম্ভব হলে প্রতি মাসে একটি করে ম্যাচ খেলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বেশি বেশি ম্যাচ খেললে সেটা আমাদের জন্যই ভালো।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন