রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটটি এত দিন সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলছিল কোনোমতে। বিভিন্ন সংকটের কারণে বছরের বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকত ঘাটের ফেরি চলাচল। পণ্যবাহী ট্রাককে ২০০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হতো গন্তব্যে। এবার বিআইডব্লিউটিএর তত্ত্বাবধানে ঘাটটি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এতে সুবিধা পাবে অন্তত ১০ জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের জেলা রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, শরীয়তপুর এবং উত্তরাঞ্চলের জেলা সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়াসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুট। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে তিনটি ফেরি থাকলেও দুটি সারা বছরই বন্ধ। শুকনো মৌসুমে নাব্যতা-সংকট আর বর্ষায় স্রোতের কারণে বছরের আট মাসই বন্ধ থাকে এই নৌরুটে ফেরি চলাচল। তখন পারাপারের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা। দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকে ২০০ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয়। সারা বছর ঘাটটি সচল রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
এই নৌরুট ব্যবহারকারীরা বলেন, একটা ফেরি চলাচল করায় তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় ফেরির অপেক্ষায়। সন্ধ্যার পরে ফেরি চলাচল না করায় বাধ্য হয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে হয়। ফেরির সংখ্যা বাড়লে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে, সেই সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ কাজী কেরামত আলী বলেন, এত দিন সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি দুর্বল ফেরি দিয়ে ঘাট পরিচালনা করলেও এখন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে উন্নত মানের রো রো ফেরি পরিচালনা করার। এতে রাজবাড়ী-পাবনার যোগাযোগ, ব্যবসা ও জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ড্রেজিং করে নদীর দুই পাড়ে ঘাট স্থাপন ওই নৌরুটের রো রো ফেরিগুলো এই নৌরুটে অচিরেই নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। তিনি আরও বলেন, এতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের শর্ট কানেকটিভি তৈরি হবে। দুর্ভোগ কমবে ১০টি জেলার লাখ লাখ মানুষের।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক মো. আশিকুজ্জামান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহনগুলোকে উত্তরাঞ্চলে যেতে হলে কুষ্টিয়ার লালন শাহ সেতু হয়ে যেতে হয়। রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুট অনেক আগে থেকে চালু থাকলেও এই রুটে ফেরি সংখ্যা অপ্রতুল। যে কারণে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ করতে বিআইডব্লিউটিএর ও বিআইডব্লিউটিসির যৌথ উদ্যোগে ফেরি সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। এত দিন ইউটিলিটি ফেরি সার্ভিস ছিল, ভবিষ্যতে এই নৌরুটে রো রো ফেরি চলাচল করবে।